Rare Species Reptile

বিরল প্রজাতির সরীসৃপের খোঁজ

সুমনের সঙ্গে শনিবার বনাঞ্চলে ক্ষেত্র সমীক্ষায় গিয়েছিলেন তাঁর দুই ছাত্র পবিত্র মাহাতো ও চন্দন দন্ডপাট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

 ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৪১
Share:

দেখা মিলেছে এই গেকোর। ছবি সমীক্ষক দলের সৌজন্যে Sourced by the ABP

ঝাড়গ্রাম জেলায় দেখা মিলল বিরল সরীসৃপ প্রজাতির গিরগিটি ‘ইস্ট ইন্ডিয়ান লেপার্ড গেকো’র (Eublepharis hardwickii)। শনিবার জেলার বনাঞ্চলে ক্ষেত্র সমীক্ষায় গিয়েছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর কলেজের প্রাণিবিদ্যার বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সুমন প্রতিহার। তাঁর নেতৃত্বে তিন জনের দলটি এক পাহাড় চুড়োয় গিরগিটির দেখা পেয়েছেন বলে দাবি। সুমন নিশ্চিত, এটি বিরল প্রজাতির গিরগিটি। ছবি দেখে বন দফতরের কর্তারাও জানাচ্ছেন, সরীসৃপটি বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনের ‘শিডিউল ওয়ান’ তালিকাভুক্ত। তবে এটি তক্ষক নয়। প্রাণীটির ব্যাপক হারে বিদেশে চোরাচালান হয়। সে কারণে এলাকা সম্পর্কে গোপনীয়তা বজায় রেখেছেন সমীক্ষকেরা। বন দফতরেরও মত, নির্দিষ্ট এলাকা প্রকাশ্যে আনা উচিত নয়।

Advertisement

রাজ্য বনপ্রাণ শাখার এক কর্তা বলছেন, ‘‘ঝাড়গ্রামে ইতিপূর্বে সরীসৃপটির অস্তিত্বের খবর জানা ছিল না। যদি ছবি ও তথ্য সত্য হয়, তা হলে অবশ্যই জঙ্গলমহলের জীববৈচিত্রের ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’

সুমনের সঙ্গে শনিবার বনাঞ্চলে ক্ষেত্র সমীক্ষায় গিয়েছিলেন তাঁর দুই ছাত্র পবিত্র মাহাতো ও চন্দন দন্ডপাট। একটি পাথরের আড়ালে হলুদ কালো ছোপের গিরগিটিকে দেখে প্রথমে পবিত্র সাপ ভেবে ভুল করেন। পর্যবেক্ষণ করে তাঁরা নিশ্চিত হন, সরীসৃপটি ‘ইস্ট ইন্ডিয়ান লেপার্ড গেকো’। সুমন বলছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ জীববৈচিত্র পর্ষদকে বিস্তারিত জানিয়েছি। যাতে এলাকার জীববৈচিত্রে ওই সরীসৃপের নামও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।’’

Advertisement

বন দফতর সূত্রে খবর, পূর্বঘাট পর্বতমালা, ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ড সীমানাবর্তী পাহাড়ি এলাকা এবং বাংলাদেশের কিছু জায়গায় এই প্রাণীটির দেখা মেলে। এ রাজ্যেও একটি জায়গায় দেখা মিলেছিল। সুমন জানাচ্ছেন, ১৮ সেন্টিমিটার লম্বা ওই গিরগিটির গাত্রবর্ণ ছিল উজ্জ্বল হলুদ। সঙ্গে সাদা-কালোর ছোপ।

প্রাক্তন বনকর্তা সমীর মজুমদার বলছেন, ‘‘বিরল প্রজাতির ওই গিরগিটিকে দেখে সাপ বলে মনে হতে পারে। কেউ তক্ষক ভ্রম করেন। এটি তক্ষক নয়। ওড়িশায় একে ‘কালাকূট’ বলা হয়। ওই গিরগিটির দেহাংশ থেকে নানা রোগ সারে এমন বিশ্বাস অনেকের। মূলত চিন, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ায় এই গিরগিটির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ফলে পাচার করা হয়। এই কারণে এদের সংখ্যা কমছে। তবে ধরা পড়লে বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনে জেল ও জরিমানা হতে পারে।’’
সুমন জানাচ্ছেন, এদের খাদ্য বলতে মূলত ছোট পোকামাকড়। এর মলে সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। যা মানুষের সংক্রমণ ঘটাতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement