Fraudulence

ভাতা আত্মসাতে যুবক বৃদ্ধ, লক্ষ্মীও

গোরাচাঁদ পেশায় দর্জি। চন্দ্রকোনা রোডে তাঁর দর্জির দোকান রয়েছে। তৃণমূলের কর্মী হিসেবেই তিনি এলাকায় পরিচিত।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৪ ০৮:০৬
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

অবাক কাণ্ড! তিনি পুরুষ। বয়সেও নবীন। ৩৮ বছরের সেই ব্যক্তিই এক সঙ্গে লক্ষ্মীর ভান্ডার ও বার্ধক্য ভাতা দুই প্রকল্পের টাকাই পাচ্ছিলেন। শেষে কারচুপি ধরা পড়ল। গ্রেফতার
হল অভিযুক্ত।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গোরাচাঁদ কুণ্ডু নামে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশে লিখিত অভিযোগ হয়। রাতেই তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁকে পশ্চিম মেদিনীপুরে গড়বেতা-৩ ব্লকের (চন্দ্রকোনা রোড) শঙ্করকাটা পঞ্চায়েতের ছোট ডাবচায়। শুক্রবার ধৃতকে গড়বেতা আদালতে তুললে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজত হয়।

জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি বলেন, ‘‘বিষয়টি নজরে আসার পরেই পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। পুলিশ ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। ওই ব্যক্তি কোন প্রকল্পের, কত টাকা, কতদিন ধরে পেয়েছেন, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। টাকা ফেরাতে উপযুক্ত পদক্ষেপই করা হবে।’’ জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকারের কথায়, ‘‘তদন্তে সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ গোরাচাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ব্লক প্রশাসনের কয়েকজন কর্মীকেও শো-কজ় করা হয়েছে, যাঁরা ওই দুই প্রকল্পের কাজকর্ম দেখভাল করেন।

Advertisement

গোরাচাঁদ পেশায় দর্জি। চন্দ্রকোনা রোডে তাঁর দর্জির দোকান রয়েছে। তৃণমূলের কর্মী হিসেবেই তিনি এলাকায় পরিচিত। এ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তুষার মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘তৃণমূলের লোকেরা এ ভাবেই সরকারি প্রকল্পে কারচুপি করে চলেছে। আর গরিব মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন।’’ তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোত ঘোষের বক্তব্য, ‘‘কেউ অন্যায় করলে পুলিশ-প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’’

গোরাচাঁদ তিনটি সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছিলেন— লক্ষ্মীর ভান্ডার, বার্ধক্য ভাতা এবং প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মাননিধি (পিএম কিসান)। তদন্তে প্রশাসনের পর্যবেক্ষণ, ওই ব্যক্তি শুধু পিএম কিসান পাওয়ার যোগ্য। লক্ষ্মীর ভান্ডারের উপভোক্তা হিসেবে এক মহিলার নাম থাকলেও গোরাচাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর যুক্ত রয়েছে। একই ভাবে বার্ধক্য ভাতার উপভোক্তা হিসেবে নাম রয়েছে এক বৃদ্ধার। তবে পোর্টালে অ্যাকাউন্ট নম্বর নথিভুক্ত রয়েছে গোরাচাঁদের। ওই মহিলা এবং ওই বৃদ্ধা বছর তিনেক আগে দুয়ারে সরকার শিবিরে আবেদন করেছিলেন। তা মঞ্জুর হয়। তবে ৩৫ মাস ধরে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা ঢুকেছে গোরাচাঁদের অ্যাকাউন্টে। ২০২১-এর সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪-এর জুলাই পর্যন্ত মাসে ১ হাজার করে ৩৫ হাজার টাকা ঢুকেছে। আর ২০২১-এর এপ্রিল থেকে ২০২৪-এর জুলাই পর্যন্ত ৪০ মাসে ১ হাজার করে বার্ধক্য ভাতার ৪০ হাজার টাকাও ঢুকেছে। এই ৭৫ হাজার টাকাই ফেরতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জেলাশাসকের নির্দেশে তদন্তে বুধবার ওই ব্লকে গিয়েছিলেন মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক মধুমিতা মুখোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গোরাচাঁদের নামে পুলিশে অভিযোগ জানান গড়বেতা ৩-এর বিডিও দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement