ধৃত জ্যোতির্ময় মাহাতো। বুধবার ঝাড়গ্রাম আদালত চত্বরে।
মৃত জমির মালিককে ‘জীবিত’ সাজিয়ে জমি আত্মসাতের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করল ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ।
অর্থ ও রাজস্ব দফতরের ঝাড়গ্রাম জেলা অবর নিবন্ধক আধিকারিক জয়জিৎ চন্দের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনায় অভিযুক্ত জ্যোতির্ময় মাহাতোকে মঙ্গলবার বিকেলে জেলা অবর নিবন্ধক দফতর থেকে গ্রেফতার করেছে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ। ধৃতকে বুধবার ঝাড়গ্রাম সিজেএম আদালতে হাজির করা হলে তদন্তের স্বার্থে পাঁচদিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
বছর বত্রিশের জ্যোতির্ময়ের বাড়ি ঝাড়গ্রাম থানার দহতমূল গ্রামে। তিনি বহু দিন ধরেই জমির কারবারে যুক্ত। এ বার পঞ্চায়েত ভোটে লোধাশুলি অঞ্চল থেকে ঝাড়গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির ১৩ নম্বর আসনের তৃণমূলের প্রার্থীও ছিলেন জ্যোতির্ময়। যদিও তিনি হেরে যান। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রাম গ্রামীণের শালবনি পেট্রল পাম্পের কাছে কলকাতার টালিগঞ্জের বাসিন্দা ভূপেন্দ্রনাথ মহালনাবীশের পাঁচ বিঘা ফাঁকা জমি বহু বছর ধরে পড়ে রয়েছে। ২০০৬ সালে ভূপেন্দ্রনাথের মৃত্যু হয়। অথচ সেই জমিই বেহাত হয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। প্রয়াত ভূপেন্দ্রনাথের মেয়ে কলকাতার তিলজলা রোডের বাসিন্দা অনিতা আডবানী খবর পান, তাঁর বাবার জমিটি আত্মসাৎ করা হয়েছে। এরপরই অনিতা ঝাড়গ্রাম জেলা অবর নিবন্ধক আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। শুরু হয় বিভাগীয় তদন্ত।
জানা যায়, চলতি বছরের ২৮ মার্চ ভূপেন্দ্রনাথ মহালনাবীশের উপস্থিতিতে ওই জমি জ্যোর্তিময়ের নামে রেজিস্ট্রি হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর মঙ্গলবার উভয়পক্ষকে শুনানিতে ডাকেন জেলা অবর নিবন্ধক আধিকারিক। বাবার মৃত্যুর শংসাপত্র দাখিল করেন অনিতা। ধরা পড়ে জ্যোতির্ময়ের জালিয়াতি। স্পষ্ট হয়ে যায়, ভুয়ো কাউকে ভূপেন্দ্রনাথ সাজিয়ে সমূহ জমি নিজের নামে রেজিস্ট্রি করিয়ে নিয়েছেন জ্যোতির্ময়। জ্যোতির্ময় সদুত্তর দিতে না পারায় পুলিশে খবর দেন জেলা অবর নিবন্ধক আধিকারিক। তাঁর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে জ্যোতির্ময়কে গ্রেফতার করা হয়।
যদিও এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে, ভুয়ো ব্যক্তিকে দেখেও কী ভাবে জমি রেজিস্ট্রি করেছিল জেলা অবর নিবন্ধকের দফতর। দফতরেই ঘুঘুর বাসা নেই তো? পুলিশের অনুমান, ওই জালিয়াতি চক্রে আরও অনেকে জড়িত। এই প্রসঙ্গে এসডিপিও (ঝাড়গ্রাম) অনিন্দ্যসুন্দর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তও শুরু হয়েছে।’’