দেশলাই বাক্সে সচিনের ছবি নিয়ে গোপাল। নিজস্ব চিত্র
জীবনের ইনিংসে অর্ধশতক পার করলেন সচিন তেন্ডুলকর। যা নিয়ে সোমবার দিনভর চর্চা চলল নেটপাড়ায়। আবেগময় গোটা দেশ। ঝাড়গ্রামের যুবক গোপাল দাসও নিজের প্রতিভা দিয়ে সচিন আবেগে শান দিলেন। ৫০টি দেশলাই বাক্সে ফুটিয়ে তুললেন সচিনের নানা ছবি।
সচিনের ৫০ বছরের জন্মদিন উপলক্ষে এই কাজ করেছেন তিনি। ৫০টি দেশলাই বাক্সের মধ্যে ‘মিনি এচার পেইন্টিং’য়ের মধ্যে দিয়ে সচিনের মুখের নানা ছবি এঁকেছেন বছর পঁয়ত্রিশের গোপাল। ঝাড়গ্রাম শহরের উত্তর বামদা এলাকায় বাসিন্দা ওই যুবক পেশায় চিত্রশিল্পী। নিজে আঁকার স্কুল চালান। দেশলাই বাক্স থেকে কাঠি বের করে তার উল্টো দিকের সাদা অংশে পেনসিল স্কেচ করেছেন তিনি। তিনি জানান, প্রতিটি ছবি আঁকতে ঘণ্টাখানেক করে সময় লেগেছে তাঁর।
এটাই প্রথম নয়। আগেও দেশলাই বাক্সে লিওনার্দো ভিঞ্চি, চার্লি চ্যাপলিন, আইনস্টাইন, শ্রীরামকৃষ্ণ, সূর্য সেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং অমর্ত্য সেনের ছবি এঁকেছেন গোপাল। কুমড়োর বীজের উপরে এঁকেছেন মহাত্মা গান্ধীর ছবি। গাছের সবুজ পাতার ফুটিয়ে তুলেছেন সুভাষচন্দ্র বসুর মুখ।
ছোট থেকেই আকার প্রতি ঝোঁক ছিল গোপালের। মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হওয়ার পরে ঝাড়গ্রাম আর্ট অ্যাকাডেমির অধ্যক্ষ সঞ্জীব মিত্রর কাছে আঁকা শিখতে শুরু করেন তিনি। ২০০৪ সালে কলা বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। অভাবের জেরে কলেজে ভর্তি হতে পারেননি। আঁকাকেই জীবনের সঙ্গী বানিয়ে ফেলেন।
গোপালরা তিন ভাই। তিনজনই সচিনের ভক্ত। গোপালের কথায়, "সচিনের ব্যাটিং দেখে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত হতাম। তাঁর খেলাটাই ছবির মতো ছিল। তাঁর শটের মধ্যে আঁকা খুঁজে পেতাম।’’
গোপালের মা গায়ত্রী বলেন, ‘‘সংসারের অভাবের জন্য ছেলেকে বেশি দূর পড়াতে পারিনি। ও ছোট থেকেই আঁকতে ভালোবাসত। খেলতে গিয়েও মাঠে মাটির উপর ছবি আঁকত। ওর বড় দাদা চঞ্চল ওকে সাহায্য করেছে।’’ চঞ্চল নিজে বলছেন, "ভাই ছবি এঁকে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করলেই প্রশংসা ভরে যায়। এবার সচিনকে নিয়ে যে কাজ করল, তাতে দাদা হিসেবে আমি গর্বিত।’’
সচিন নিজে এই কাজ দেখুন, গোপাল ও তাঁর পরিবারের প্রার্থনা এখন এটাই।