প্রতীকী চিত্র।
দিন চারেক আগে স্কুলে যাবে বলে বেরিয়ে বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিল বছর তেরোর এক কিশোর। ঘরের লোকজন থানা-পুলিশে অভিযোগ জানানো থেকে শুরু করে খোঁজ চালিয়েছিল আশেপাশের এলাকায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজেই ঘরে ফিরল সপ্তম শ্রেণির ওই পড়ুয়া। তার কাছ থেকে পালানোর কারণ এবং তার পরবর্তী ঘটনা শুনে চক্ষু চড়কগাছ পরিজনের।
ওই কিশোরের বাড়ি দিঘা উপকূল থানা এলাকার একটি গ্রামে। তার পরিবার সূত্রের খবর, টিউশন শিক্ষককে পছন্দ হত না কিশোরের। বাড়িতে সে কথা জানিয়েও ছিল। কিন্তু বাবা-মা তাতে গুরুত্ব না দেওয়ায় সে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। ছাত্রটি ফিরে বাড়ির লোকজনকে জানিয়েছে, গত ১৫ জুলাই সাইকেলে স্কুলে যাওয়ার সময় রাস্তায় তার সাইকেলের চাকা ফেটে যায়। স্থানীয় একটি দোকানে সাইকেল সারাতে দিয়ে সে চলে যায় দিঘা স্টেশনে। পরে সকাল ১১টার লোকাল ট্রেনে চেপে পৌঁছে যায় মেচেদায়।
মেচেদায় স্টেশনের আশপাশে কাজের সন্ধান করে ওই ছাত্র। সেখানে কাজ না পেয়ে অন্য ট্রেন ধরে সে সোজা চলে যায় হাওড়ায়। ওই রাতে স্টেশনেই ঘুমিয়ে পড়ে। পরের দিন ১৬ জুলাই স্টেশনের কাছে একটি হোটেলে বাসন মাজা, পেঁয়াজ কাটার কাজ করতে শুরু করে ওই ছাত্রটি। এদিকে, ছেলে বাড়ি না ফেরায় পরিজন বিদ্যালয়, টিউশন, বন্ধুদের বাড়ি, এমনকী, সারা দিঘায় খোঁজ চালান। তাতেও ছেলে না মেলায় শেষে বাবা গত ১৬ জুলাই দিঘা উপকূল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সেই মতো পুলিশ খোঁজখবর করা শুরু করে।
বাড়ি ফিরে ওই ছাত্র জানিয়েছে, হোটেলের হাড়ভাঙা কাজে সে ভেঙে পড়ে। এত কাজের অভ্যেস তার ছিল না। হোটেল মালিকের কাছে দু’দিনের কাজের পরিশ্রমিক বাবদ ২০০ টাকা নিয়ে সে হাওড়া থেকে দিঘাগামী ট্রেনে উঠে পড়ে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দিঘা পৌঁছে ছাত্রটি বাড়ি ফিরে আসে। তার মা বলেন, ‘‘এই ক’টা দিন কীভাবে কেটেছে, তা বলে বোঝাতে পারব না। ছেলে বাড়িতে ফিরে এসেছে। এটাই আমাদের শান্তি।’’
মা-বাবাকে ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে তারও যে দিন ভাল কাটেনি, তা জানিয়েছে ওই কিশোর। তার কথায়, “হাওড়ার হোটেলে কাজ করার সময় বাবা-মায়ের কথা খুব মনে পড়ছিল। ওদের জন্য কষ্টও হচ্ছিল। তাই কাজ ছেড়ে বাড়ি চলে এলাম।’’