ঝাড়গ্রামের শালবনি কাজু বাগানে রেসিডেন্সিয়াল হাতি। বুধবার। নিজস্ব চিত্র ranjanpaljgm@gmail.com
তাপমাত্রার পারদ ৪১ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। স্বস্তি পেতে মঙ্গলবার বিকেলে পুকুরে স্নান করতে গিয়েছিলেন এক প্রৌঢ়। একই সময়ে জঙ্গল থেকে হুড়মুড়িয়ে বেরিয়ে একটি হাতিও ওই পুকুরে নেমেছিল। তারপরে হাতির হানায় বেঘোরে প্রাণ গেল ওই প্রৌঢ়ের।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সুধানাথ মাহাত (৫৬)। ঝাড়গ্রাম থানার দুধকুন্ডি গ্রাম পঞ্চায়েতের সাগড়ভাঙ্গা গ্রামের লাগোয়া পুকুরপাড়ে ঘটনাটি ঘটেছে। পুকুরে হাতি থাকায় দেহ উদ্ধার করতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যায়। ওই এলাকাটি খড়্গপুর বন বিভাগের কলাইকুন্ডা রেঞ্জের বারডাঙ্গা বিটের অন্তর্গত। সুধানাথ চাষ জমিতে কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন আসরে কীর্তনও করতেন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার বিকেলে চাষের কাজ সেরে গ্রাম সংলগ্ন পুকুরে স্নান করতে যান তিনি। তখনই পার্শ্ববর্তী বায়ুসেনার বোম্বিং এরিয়ার ভুলারবন জঙ্গল থেকে একটি দলছুট দাঁতাল হাতি নেমে পড়ে পুকুরে। পুকুরের মধ্যে হাতিকে দেখে পালানোর চেষ্টা করেন সুধানাথ। তবে তাঁকে ধরে ফেলে হাতিটি এবং শুঁড়ে তুলে আছাড় মারতে থাকে। সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত হাতিটি ওই পুকুরের পাড়ে দাঁড়িয়ে ছিল। খবর পেয়ে বন দফতরের লোকজন ঘটনাস্থলে যান। হাতিটি সরে যাওয়ার পর পুকুর পাড়ের চারদিকে খোঁজা হলেও সুধানাথের খোঁজ মেলেনি। বাসিন্দারা পুকুরের জলে নেমে খোঁজ শুরুর পরেই সুধানাথকে নিথর অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁকে উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতের ছেলে খোকন মাহাতো বলেন, ‘‘বাবা কাজ থেকে ফিরে প্রতিদিনই পুকুরে স্নান করতে যেতেন। তীব্র গরমে হাতিটিও জল খেতে অথবা স্নান করতে গিয়েছিল। হাতি সামনে চলে আসায় বাবা আর পালাতে পারেননি।’’ বুধবার ঝাড়গ্রাম পুলিশ মর্গে ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
বন দফতর সূত্রে খবর, গত আর্থিক বর্ষে ঝাড়গ্রাম ও খড়্গপুর ডিভিশন মিলিয়ে হাতির হানায় ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি আর্থিক বর্ষে দুই ডিভিশন মিলিয়ে এই নিয়ে ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। খড়গপুরের ডিএফও শিবানন্দ রাম বলেন, ‘‘হাতির হানায় মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’’