হলদিয়া তেল শোধনাগারে আগুন। নিজস্ব চিত্র
হলদিয়া তেল শোধনাগারের একটি টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। তাতে ঝলসে মৃত্যু হল ৩ জনের। অগ্নিকাণ্ডে আহত ৪৪ জন। মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। জখমদের মধ্যে কয়েক জনকে গ্রিন করিডর করে কলকাতায় আনা হয়েছে। তাঁদের বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আরও কয়েক জনকে আনা হচ্ছে কলকাতায়।
হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের তৃণমূলের অবজার্ভার সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৪৭ জন জখম বলে জানতে পেরেছি। এঁদের মধ্যে ৭ জন বাদ দিয়ে বাকিদের কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।’’ জখমদের কয়েক জন ভর্তি তমলুক হাসপাতালে।
যদিও দুর্ঘটনার কিছুটা পরে কারখানার তরফে দেওয়া একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর দু’টো বেজে ৫০ মিনিটে এমএসকিউ টাওয়ারে শাটডাউন সংক্রান্ত কাজ চলার সময় দুর্ঘটনা ঘটেছে। অগ্নিকাণ্ডের জেরে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। ঝলসে গিয়ে জখম হয়েছেন ৪৪ জন। আগুন দ্রুত আয়ত্তে এসেছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর ২টো নাগাদ হলদিয়া তেল শোধনাগারের একটি টাওয়ারে আগুন ধরে যায়। সেই সময় ওই টাওয়ারে কয়েক জন কর্মী কাজ করছিলেন। জায়গাটিতে অতিদাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন আরও বিধ্বংসী হয়ে ওঠে।ঘটনাস্থলে থাকা এক শ্রমিক বলেন, ‘‘গত কয়েক দিন ধরেই ওই টাওয়ারে শাটডাউনের কাজ চলছিল। কাজ করছিল মুম্বইয়ের একটি সংস্থা। ঘটনার সময় ওয়েল্ডিংয়ের আগুন ছিটকে গিয়েই টাওয়ারে আগুন লেগে যায়।’’ একাংশ কর্মী জানিয়েছেন, হতাহতদের অধিকাংশই ভিন্রাজ্যের বাসিন্দা। তবে স্থানীয় কিছু যুবকও এই কাজে যোগ দিয়েছিলেন।
আগুন দেখে তড়িঘড়ি উদ্ধারকাজ শুরু করে কারখানার দমকল বাহিনী। এঁদের মধ্যে কয়েক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। শুরু হয় আগুন আয়ত্তে আনার কাজও। ঘটনাস্থলে যান জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকরা। জখমদের মধ্যে অনেকেই ঠিকা শ্রমিক বলে জানা গিয়েছে। হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল আজগর আলি জানান, “বিপজ্জনক জায়গায় আরও বেশি সতর্কতা বজায় রেখে কাজ করা উচিত ছিল। গোটা ঘটনায় কারখানার গাফিলতি ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা উচিত। হলদিয়া তৈল শোধনাগারে এত বড় দুর্ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি।’’
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে উৎকণ্ঠায় জখম শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা। শ্রমিকদের তরফে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবারই কারখানার ভিতরে মক ড্রিল চলছিল। সেই মক ড্রিল শেষ হয়ে যাওয়ার পরে ওই টাওয়ারে আগুন লাগে।