তালাবন্ধ নতুন ভবন। নিজস্ব চিত্র
লালগড়ের ১০ শয্যার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে ৩০ শয্যার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে উন্নীত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি গত ১৫ নভেম্বর বেলপাহাড়ির সাহাড়ি থেকে ৩০ শয্যার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির উদ্বোধনও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর তিন সপ্তাহ পার হলেও চালু হয়নি, লালগড়ের ৩০ শয্যার স্বাস্থ্যকেন্দ্র। তালাবন্ধ অবস্থায় রয়েছে নতুন ভবনটি।
এক সময় এই লালগড়কে কেন্দ্র করে অশান্ত হয়ে উঠেছিল জঙ্গলমহল। রাজ্যে সরকার বদলের পরে এখন লালগড়ে ঝাঁ-চকচকে বহুতল নার্সিং ট্রেনিং স্কুল হয়েছে। চওড়া পিচের রাস্তাও হয়েছে। ঝাড়গ্রামের সঙ্গে সহজ যোগাযোগের জন্য কংসাবতীর উপর সেতু তৈরি হয়েছে। জমজমাট দোকান-বাজার ও বসতি হয়েছে। এক সময় প্রায় পাঁচ একর জায়গা জুড়ে লালগড় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে উঠেছিল। তাতে ১০টি শয্যা রয়েছে। সেটিকে নতুন করে ৩০ শয্যার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে উন্নীত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার জন্য ১৪ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে রাজ্য সরকার। নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয় পূর্ত দফতরকে (সোশ্যাল সেক্টর)। ২০১৯ সালের শেষ দিকে তার প্রথম পর্যায়ের কাজ শুরু হয়। ওই টাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে মোট ছ’টি ভবন তৈরি হয়েছে। একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য, একটি আইসোলেশনের জন্য। বাকিগুলির মধ্যে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের গ্রুপ-ডি কর্মীদের, একটি চিকিৎসকদের এবং দু’টি নার্সদের জন্য বরাদ্দ।
লালগড় ব্লক সদর ও সংলগ্ন গ্রামগুলির প্রায় ২০ হাজার মানুষ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির উপর নির্ভরশীল। এ ছাড়া পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনি ব্লকের ভীমপুর ও পিড়াকাটা অঞ্চলের রোগীদের কাছেও লালগড়ের এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিই ভরসা। এলাকার বেশিরভাগ বাসিন্দা আদিবাসী ও অনগ্রসর শ্রেণির। তাই সিংহভাগ বাসিন্দা সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার উপর নির্ভরশীল প্রতিদিন এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রচুর রোগীর আসেন। কারণ, বিনপুর-১ ব্লকের ব্লক সদর এলাকা হল লালগড়। তা ছাড়া লালগড় এলাকাটি বেশ জনবহুলও। এক সময় লালগড় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি মাত্র ১০ শয্যার হওয়ায়, এখানে রোগীদের ঠাঁই দেওয়া মুশকিল হয়ে পড়ত। তাই লালগড় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ৩০ শয্যার হাসপাতালে উন্নীত করেছে রাজ্য সরকার।
প্রসঙ্গত, এখনও সঙ্কটাপন্ন রোগীদের ২০ কিলোমিটার দূরের ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কিংবা ৪২ কিলোমিটার দূরে পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরে অবস্থিত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধনের পরেও হাসপাতালটি নতুন ভবনে স্থানান্তরিত হয়নি। লালগড় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল নতুন ভবনটি তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ঝাড়গ্রাম জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক ভুবনচন্দ্র হাঁসদা বলেন, ‘‘নতুন ভবনে জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যে চালু হয়ে যাবে।’’