সংশোধন: বাঁ দিকে পুরনো ও ডান দিকে নতুন পোস্ট। ছবি: ফেসবুক
সমাজ মাধ্যমে কৃষি দফতরের এক আধিকারিকের পোস্ট ঘিরে তৈরি হয়েছিল বিভ্রান্তি। অনেকেই ভেবেছিলেন, কেশিয়াড়িতে হানা দিয়েছে পঙ্গপালের দল। যদিও কৃষি দফতর জানাচ্ছে, কেশিয়াড়ির ঘৃতগ্রাম পঞ্চায়েতের বগলাডাঙা গ্রামের মাঠে যে পতঙ্গটিকে দেখা গিয়েছে, সেটি পঙ্গপাল নয়। সেটি আদতে গ্রাসহপার বা রঙিন ছোপওয়ালা ঘাস ফড়িং। এরপরই নিজের পোস্টটি সংশোধন করে নিয়েছেন ওই কৃষি আধিকারিক।
ঘটনার শুরু গত ৩ মে। এলাকায় ‘পঙ্গপাল’-এর দেখা মিলেছে খবর পেয়ে শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান ব্লকের কৃষি দফতরের সহকারী প্রযুক্তি নিবন্ধক তথা টেকনিক্যাল ম্যানেজার সৌমেন পাত্র। এরপর তিনি নিজের সমাজ মাধ্যমের প্রোফাইল থেকে একটি পোস্টও করেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘কেশিয়াড়িতে পঙ্গপাল’। এরপরই শুরু হয় বিতর্ক। কেশিয়াড়িতে খোঁজ পাওয়া পতঙ্গটি যে উত্তর-পশ্চিম ভারতের খেতে আক্রমণ চালানো মরু পঙ্গপাল নয়, সে কথা সাফ জানিয়ে দেয় কৃষি দফতরও। এরপরই সৌমেন পাত্রের পোস্ট নিয়ে শুরু হয় শোরগোল। অনেকে তাঁর পোস্টের বিরোধিতাও করেন। কেউ কেউ আবার কমেন্ট করে অযথা আতঙ্ক না ছড়নোর পরামর্শ দেন। এরপর পোস্টটি শুধরে নেন সৌমেন।
এরপরই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। রাজস্থান-সহ বিভিন্ন রাজ্য যখন পঙ্গপালের আক্রমণে জেরবার। সেই সময়ে কী ভাবে একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক এমন পোস্ট করলেন! ব্লক কৃষি দফতর জানাচ্ছে, কেশিয়াড়ির ওই এলাকায় দেখতে পাওয়া পতঙ্গটি আদতে প্রিন্টেড গ্রাসহপার বা রঙিন ছোপের ঘাস ফড়িং। এর সঙ্গে মরু পঙ্গপালের কোনও যোগ নেই। এদের ঝাড়গ্রামের জঙ্গলে প্রায়ই দেখা যায় এবং এরা আকন্দ গাছের পাতা খায়। কেশিয়াড়িতে আসা দলটিতে ৩০০-৪০০টি পতঙ্গ কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে কেবল আকন্দ গাছের পাতাই সাবাড় করছে মাত্র। কৃষি দফতর জানাচ্ছে, এই পতঙ্গের কারণে খেতের ফসলের ক্ষতি হওয়ার কোনও খবর নেই। এই প্রসঙ্গে সৌমেন বলেন, ‘‘ওটা পঙ্গপাল নয়। তবে অনেকটা ওই রকমই দেখতে।’’
ব্লকের সহ-কৃষি আধিকারিক সজল সরকার বলেন, ‘‘পতঙ্গটিকে বিশেষজ্ঞরা প্রিন্টেড গ্রাসহপার বলেই জানাচ্ছেন। এরা ফসলের ক্ষতি করে না। মরু পঙ্গপালের সঙ্গে এদের কোনও যোগ নেই।’’ তাঁর পোস্ট দেখে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ানোর প্রসঙ্গে সৌমেন বলেন, ‘‘আতঙ্ক ছড়াতে চাইনি। ওই রকম পতঙ্গ দেখা গিয়েছে, তার খবর দিতে গিয়ে পুরো বিষয়টি না জেনেই পোস্ট করে ফেলেছি। পরে পোস্টটি সংশোধনও করেছি।’’ সৌমেনের করা পোস্ট নিয়ে ব্লক সহ-কৃষি অধিকর্তা সজল সরকার বলেন, ‘‘কৃষি দফতরের দল এলাকায় ঘুরে এসেছেন। না জেনে সমাজ মাধ্যমে পোস্টটি করা ঠিক হয়নি। যাতে আতঙ্ক আর না ছড়ায়, বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’’