আলোচনায় দিলীপ। নিজস্ব চিত্র
ঘোষণা হল পরে। কিন্তু কর্মসূচি হবে ২৪ ঘণ্টা আগেই!
কাল, মঙ্গলবার রেলের বিরুদ্ধে রেলশহরে জমায়েতের কথা বেশ কিছু দিন আগেই জানিয়েছিলেন তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার বিজেপি-র তরফে জানানো হল, আজ সোমবার স্থানীয় সমস্যা তুলে ধরে রেলশহর জুড়ে পথসভা করা হবে। এ দিন খড়্গপুরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষের সঙ্গে আলোচনা করেই এই কর্মসূচি ঠিক হয়েছে।
বসে নেই দিলীপও। শনিবারই শহরে একপ্রস্থ জনসংযোগ সেরেছেন তিনি। রবিবারও সকালে জনতার দরবারে হাজির হয়েছেন। তবে আজ, সোমবার রেলশহরে বিজেপি-র এক ডজন পথসভায় দিলীপ থাকছেন না। বিজেপি সূত্রে খবর, ওই পথসভা থেকে একদিকে যেমন কেন্দ্রীয় সরকারের জননীতি প্রচার হবে, অন্য দিকে রেলশহরের সার্বিক সমস্যা নিয়ে সরব হবে গেরুয়া শিবির। রেল এলাকার সমস্যা তুলে ধরে রেল আধিকারিকদের বিরুদ্ধেও সুর চড়ানো হবে বলে খবর।
গত বিধানসভা ভোটে খড়্গপুর সদর (শহর) কেন্দ্রে জেতেন দিলীপ। এ বার লোকসভাতেও মেদিনীপুর কেন্দ্র থেকে জিতেছেন তিনি। দিলীপ সাংসদ হওয়াতেই খড়্গপুর সদরে এ বার বিধানসভা উপ-নির্বাচন আসন্ন। তার আগে শুভেন্দুকে সামনে রেখে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে তৃণমূল। ‘গড়’ রক্ষায় মরিয়া দিলীপও। শনিবারই ‘খাসতালুকে’ এসে জনসংযোগে ঝাঁপিয়েছেন তিনি। রবিবার ছুটির দিন সকালেও চেনা কায়দায় প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে সাউথসাইড এলাকায় মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন সাংসদ। পরে গিয়েছিলেন সুভাষপল্লি মনসামন্দিরে। সেখানে পুজো দেওয়ার পরে স্থানীয় মহিলারা তাঁকে সংবর্ধনা দেন। পরে রেল বাংলোয় নিজের সাংসদ কার্যালয়ে এসে ফের অভাব-অভিযোগ শোনেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করে রেলের নিত্যযাত্রী সংগঠন। সংগঠনের সভাপতি জয় দত্ত বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে খড়্গপুর-হাওড়া একটি নন-স্টপ ট্রেনের দাবিতে লড়াই করছি। এই বিষয়টি সাংসদকে জানিয়েছি। এছাড়াও আমরা পুরুলিয়া এক্সপ্রেস, স্টিল এক্সপ্রেস ও খড়্গপুরের মালগুদামের টিকিট কাউন্টার নিয়ে নানা সমস্যা সাংসদকে জানিয়েছি।” এ দিন বাংলোয় প্রয়াত প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির স্মরণে যজ্ঞও করেন বিজেপি সাংসদ। পরে যোগ দেন ১৯নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির একটি রক্তদান শিবিরে।
এই জনসংযোগের মাঝেই দলের কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তারপরই ১২টি পথসভার সিদ্ধান্ত হয়। আজ, সোমবার গোলবাজার, নিমপুরা, কৌশল্যা, প্রেমবাজার, মালঞ্চ-সহ ১২টি এলাকায় ওই কর্মসূচি হবে। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, “তৃণমূল মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে। আমরা চাইছি মানুষের কাছে যেন ভুল বার্তা না যায়। এক্ষেত্রে রেলমন্ত্রক নয়, স্থানীয় রেল আধিকারিকদের একাংশের জন্য যে রেলের এলাকায় সমস্যা রয়েছে তা জানাবো আমরা। সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের জনমুখী কর্মসূচি প্রচার করতেই ১২টি পথসভা হবে।”
শুভেন্দুর ডিআরএম অফিসে জমায়েতের পাল্টা হিসেবেই কি এক ডজন পথসভা?
মানতে নারাজ দিলীপ। তিনি বলেন, “লোকসভা নির্বাচনের পরে আমরা সদস্যতা অভিযান নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। এখন খড়্গপুরে নির্বাচনও রয়েছে, সমস্যাও রয়েছে। তাই স্থানীয় সমস্যা নিয়ে প্রচার তো হবেই। শুভেন্দু অধিকারী থাকুন না এখানে। দিদি তো সাতদিন থেকেছিলেন, কী ফল হয়েছে!”