Death

পুকুরপাড়ে দম্পতির রহস্যমৃত্যু মেদিনীপুরে, মাছ চুরি ঠেকাতে বিদ্যুৎ সংযোগে বিপত্তি?

বুধবার সকালে মোরখা এলাকায় একটি পুকুরের পাড় থেকে উদ্ধার হয় এক দম্পতির দেহ। তাঁদের নাম বাপি মান্ডি এবং মুঙ্গলি মান্ডি। ঘটনার জেরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২২ ১১:৫৫
Share:

এই পুকুর থেকেই উদ্ধার হয় মৃতদেহ। —নিজস্ব চিত্র।

পুকুরপাড়ে মিলল এক দম্পতির দেহ। এই ঘটনা ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের সদর ব্লকের মোরখা গ্রামে। মৃতদেহ দু’টি উদ্ধারের জন্য পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁদের দাবি, পুকুরের চার পাশে বিদ্যুতের তার বিছিয়ে রেখেছিলেন মালিক। তার জেরেই এই বিপত্তি ঘটেছে। ওই পুকুরটির মালিক স্থানীয় পাঁচখুরি ৬/২ পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। তাঁর বাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। বিক্ষোভকারীরা পুকুরের মালিককে গ্রেফতারের দাবিও জানিয়েছেন।

Advertisement

বুধবার সকালে মোরখা এলাকায় একটি পুকুরের পাড় থেকে উদ্ধার হয় ওই দম্পতির দেহ। তাঁদের নাম বাপি মান্ডি এবং মুঙ্গলি মান্ডি। ঘটনার জেরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মাছ চুরি ঠেকাতে ওই পুকুরের মালিক সেখানে বিদ্যুতের তার বিছিয়ে রেখেছিলেন। তাঁদের দাবি, ভোরবেলা পুকুরে নামতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই দম্পতির। এর প্রতিবাদে মোরখা গ্রামের এলাইগঞ্জে পথ অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। ভাঙচুর করা হয় পুকুরের মালিকের বাড়িও। বুবাই মান্ডি নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘ভোরবেলা ওঁরা পুকুরে এসেছিলেন। মালিক পুকুরের পাড়ে বিদ্যুতের তার বিছিয়ে রেখেছিলেন। তিনি গ্রামবাসীদের কাউকে বিষয়টি জানাননি। সকালে এসে দেখি ওঁরা দু’জন মারা গিয়েছেন। মালিকও বিদ্যুতের তার সরিয়ে নিয়ে চলে গিয়েছেন। আমরা চাই পুকুরের মালিককে গ্রেফতার করে সব কিছু জানতে চাওয়া হোক।’’

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। কিন্তু মৃতদেহ উদ্ধারে স্থানীয় বাসিন্দারা বাধা দেন। তাঁদের দাবি, পুকুরের মালিককে গ্রেফতার করতে হবে। সুশান্ত টুডু নামে এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘ওঁরা ভোরবেলা পুকুরে নেমেছিলেন। সকালে দেখা যাচ্ছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন। পুকুরের পাড়ে বিদ্যুতের তার বিছানো ছিল। পুকুরমালিকই এই সব করেছে। মৃত্যুর পর বিদ্যুতের তার সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

বেশ কয়েক ঘণ্টা পর বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে দম্পতির দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেহ দু’টি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে খোঁজ মিলছে না পুকুর মালিক তথা তৃণমূলের ওই পঞ্চায়েত সদস্যের। এ নিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, ‘‘এমন ঘটনা অপরাধ। বিদ্যুতের তার কেন বিছিয়ে রাখা হয়েছিল তার জবাব ওকে দিতে হবে। পুলিশ বিষয়টির তদন্ত করছে। বেআইনি কাজের জন্য তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি অরূপ দাস বলেন, ‘‘উনি এলাকার মানুষের ভোটে জিতেছিলেন। এর পর এলাকার লোককে চোর সন্দেহ করে পুকুরে এ ধরনের কাজ করে থাকলে খুব অন্যায় করেছেন। ওঁর সদস্যপদ বরখাস্ত করা ছাড়াও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।’’

এ নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক আয়েশা রানি বলেন, ‘‘খবর পেয়ে এলাকায় বিডিওকে পাঠানো হয়েছিল। ওই দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে। তাদের পাশে দাঁড়াবে প্রশাসন। যে ঘটনা ঘটেছে তা মর্মান্তিক।’’

এলাকায় বাঁধনা পরব ছিল মঙ্গলবার। তার পর দিন দম্পতির মৃত্যুতে শোকের আবহ মোরখা গ্রামে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement