মৃত আরুশি দাস। নিজস্ব চিত্র ।
কীটনাশক জলে ঢেলে দুধ ভেবে খেয়ে নিল দুই শিশু। তার জেরে বছর পাঁচেকের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অন্য শিশুটি কলকাতার পিজি হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন। শনিবার ঘটনাটি ঘটে চন্দ্রকোনা থানার কাশিগঞ্জ লাগোয়া বেড়াবেড়িয়া গ্রামে।
বেড়াবেড়িয়া গ্রামে পাশাপাশি বাড়ি ওই দু’জনের। বছর পাঁচেকের আরুশি দাসের বাড়িতেই খেলছিল বছর তিনেকের নিশু দাস। খেলার মাঝেই বাড়িতে রাখা একটি কীটনাশক বোতল দেখতে পায় তারা। সেটি তাদের হাতের নাগালেও ছিল। আরুশির মা তখন অন্যের জমিতে আলু তুলতে গিয়েছিলেন। বাবা গিয়েছিলেন ঢালাইয়ের কাজে। বাইরে বৃষ্টি চলায় বাড়ির অন্যরা ব্যস্ত ছিলেন। এর মধ্যেই কীটনাশক বোতলটি হাতে নিয়ে তারা খাওয়ার পরিকল্পনা করে। দু’টি কাপও নিয়ে আসে। তাতে জল দিয়ে কীটনাশক ঢেলে দেয়। জলে কীটনাশক মিশতেই তার রং সাদা হয়ে যায়। এরপরেই সেটি দুধ ভেবে খেয়ে নেয় তারা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, খাওয়ার ঘণ্টাখানেক পর থেকেই আরুশির বমি শুরু হয়। অসুস্থ হয়ে পড়ে নিশুও। আরুশিকে ক্ষীরপাই গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখান থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হয়ে তাকে কলকাতায় পাঠানো হয়। এই দীর্ঘসময়ে সে ভাবে তার কোনও চিকিৎসা হয়নি বলে খবর। মাঝে সরকারি হাসপাতালগুলি কেন ওই শিশুকে একটু স্থিতিশীল করার চেষ্টা করল না সেই প্রশ্ন উঠছে।শনিবার বিকালের দিকে মেদিনীপুর থেকে কলকাতা যাওয়ার পথে কোলাঘাটের এক বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় আরুশিকে। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। অন্য শিশুটিকে কলকাতার পিজি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারও অবস্থা সঙ্কটজনক।
আরুশির বাবা শিবু দাস রাজমিস্ত্রির সহযোগীর কাজ করেন। তার সঙ্গেই অন্যের জমিতে অল্প চাষবাসের কাজও করেন। সেই কারণেই বাড়িতে কীটনাশক মজুত ছিল। সেটি বাচ্চাদের হাতের নাগালে থেকে যাওয়ার জন্যই ঘটে গেল এত বড় দুর্ঘটনা।