—নিজস্ব চিত্র।
বেআইনি ভাবে এক শিক্ষককে স্কুলে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগে সিআইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন খামারচক হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অশোক কুমার হাটুয়া ও পূর্ব মেদিনীপুরের প্রাক্তন স্কুল পরিদর্শক (ডিআই, মাধ্যমিক) চাপেশ্বর সর্দার। বৃহস্পতিবার দুই ধৃতকে তমলুকের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাঁদের ৭ দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। সরকারি আইনজীবী সফিউল আলি খান বলেন, ‘‘সিআইডি অভিযুক্তদের জামিনের বিরোধিতা করে ১৪ দিনের রিমান্ড চেয়েছিল। তবে বিচারক সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।’’
সূত্রের খবর, ২০১৪ সালে খামারচক হাই স্কুলে এক শিক্ষকের নিয়োগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পরবর্তী কালে পূর্ব মেদিনীপুরের ডিআই এই অবৈধ নিয়োগের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। পরে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে সিআইডির নেতৃত্বে সিট গঠন করে মামলার তদন্ত শুরু হয়। বুধবার এই প্রধান শিক্ষক ও প্রাক্তন ডিআইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়। তার পরেই দু’জনকে সিআইডি গ্রেফতার করে। ধৃত প্রধান শিক্ষকের ঘনিষ্ঠ শিক্ষক তপন শাসমল জানান, ২০১৪ সালে তৎকালীন ডিআইয়ের অনুমোদন নিয়ে এক শিক্ষক ওই স্কুলে যোগ দেন। ২০১৮ সালে অনুমোদন আসার পর থেকে তিনি বেতন পাচ্ছেন। সেই নিয়োগের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ায় অশোককুমার হাটুয়া-সহ ওই শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া তৎকালীন ডিআইকে সিআইডি গ্রেফতার করেছে।
তপনের দাবি, ‘‘নিয়োগপ্রাপ্ত ওই শিক্ষকের পদবি হাটুয়া হওয়ায় তাঁকে প্রধান শিক্ষকের আত্মীয় বলে চালানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘ডিআইয়ের অনুমোদন দেখেই প্রধান শিক্ষক ওই ব্যক্তিকে শিক্ষকতায় যোগ দেওয়ার সুযোগ দিয়েছিলেন। তবে ২০১৪ সাল থেকে কাজ করলেও ২০১৮ সালে অনুমোদন আসার পর ওই শিক্ষকের বেতন চালু হয়। এই ঘটনায় প্রধান শিক্ষককে পার্টি করা হয়েছে। তবে সত্যি ঘটনা কী, কী ভাবে এই নিয়োগ নিয়ে সমস্যা হয়েছে, তা আমাদের জানা নেই। আইনের উপর আমাদের আস্থা রয়েছে। সিআইডি তদন্ত করে সঠিক তথ্য উদঘাটন করবে এই আশা রাখছি।’’
বৃহস্পতিবার ধৃতদের তমলুক আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে সিআইডির এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আজ ধৃতদের আদালতে হাজির হচ্ছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অবৈধ শিক্ষক নিয়োগের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার তদন্তের জন্য দুই অভিযুক্তকে হেফাজতে নেওয়া হবে। তাঁদের ১৪ দিনের জন্য রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে।’’ তমলুক আদালতের সরকারি আইনজীবী সামসুল আলি খানের বক্তব্য, ‘‘নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে এফআইআরে নাম রয়েছে ওই প্রধান শিক্ষক ও তৎকালীন ডিআইয়ের। এই কারণেই সিআইডি আজ দু’জনকেই হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে।’’