উধাও স্বাস্থ্যস্বাথী প্রকল্পের ৫ হাজার আবেদনকারী।
প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করতে ফর্ম এসে গিয়েছে, কিন্তু খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ফর্মের প্রাপকদের। খড়গপুর পুরসভা সূত্রে জানা যাচ্ছে এমন খবরই। সম্প্রতি পুরসভায় স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করতে ১৫ হাজার ফর্ম এসেছে। তবে সেই তালিকার প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের খোঁজ মিলছে না। ঘটনার কথা মেনেছে পুরসভাও।
এ ক্ষেত্রে রাজ্যস্তর থেকে আসা ওই ফর্মের ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়ে বিপাকে পড়েছে পুরসভা। সমস্যা সমাধানে শুক্রবার সন্ধ্যায় পুরসভায় একটি বিশেষ বৈঠকও ডাকা হয়। খবর, বৈঠকে পুরসভার সব কাউন্সিলরদের ডাকা হয়েছিল। সেখানেই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে নাম নথিভুক্তের তালিকা অনুযায়ী ফর্ম এলেও পাঁচ হাজার মানুষের কেন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না, সে বিষয়ে আলোচনা হয়। জানা গিয়েছে, নিখোঁজদের খোঁজে শহর জুড়ে মাইকে প্রচার চালানো হবে।
পাশাপাশি, কাউন্সিলরদের নিজেদের এলাকায় নিখোঁজদের তালিকা টাঙাতেও বলা হয়েছে। ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার। তিনি বলছেন, “আমাদের ১৫ হাজার স্বাস্থ্যসাথীর ফর্ম-সহ তালিকা দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে যাঁদের রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বীমা যোজনায় নাম নথিভুক্ত রয়েছে, তাঁদের ফর্মপূরণ করতে বলা হয়েছে। কিন্তু আমরা তালিকায় নাম থাকা প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের খোঁজ পাচ্ছি না। যাঁদের খোঁজ পাচ্ছি না, তাঁদের খুঁজতে মাইক প্রচার চলবে।”
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্যার সূত্রপাত ২০১১ সালের আর্থ-সামাজিক সমীক্ষার রিপোর্টে। রাজ্যস্তর থেকে স্বাস্থ্যসাথীর যে ফর্মগুলি এসেছে, সেগুলি মূলত ২০১১ সালের সমীক্ষায় রিপোর্টে উল্লিখিত নাম অনুসারে। তাই অনেকের মতে, আর্থ-সামাজিক সমীক্ষায় গরমিলের জেরেই এই ঘটনা। ঘটনায় সরব হয়েছে বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতা এসেছিল। এর আগে ২০১০ সালে খড়্গপুর পুরসভার বোর্ডে ক্ষমতা দখল করেছিল তৃণমূল। সেই সময় আর্থ-সামাজিক সমীক্ষার রিপোর্টে ভুয়ো নাম রাখতে গিয়েই এমন বিপত্তি হয়েছে। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, “২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল। খড়্গপুর পুরসভাতেও তৃণমূল। তাই সেই সময়ে আর্থ-সামাজিক সমীক্ষা কতটা স্বচ্ছভাবে হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আমাদের ধারণা কারচুপি করে কিছু ভুয়ো নাম তৃণমূল তখন ঢুকিয়ে দিয়েছিল। আমাদের দাবি নতুন করে সমীক্ষা করে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড দেওয়া হোক।”
২০১১ থেকে ২০১৯— মাত্র আট বছরে এত মানুষ কী ভাবে শহর থেকে উধাও হয়ে গেলেন, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “আমরা আপাতত প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষকে ফর্ম বিলি করতে পেরেছি। বাকিদের খোঁজ চলছে।’’