মঞ্চে তখন বক্তা অজিত মাইতি। মেদিনীপুরের লালদিঘিতে। নিজস্ব চিত্র
পশ্চিম মেদিনীপুরে ৬টি পুরসভার আসন সংরক্ষণের খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। ১০ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হবে। প্রশাসন সূত্রে খবর, খসড়া তালিকা নিয়ে সব মিলিয়ে ৪টি অভিযোগ এসেছে। সবক’টিই এসেছে খড়্গপুর নিয়ে। অভিযোগগুলোর প্রেক্ষিতে আজ, শুক্রবার শুনানি হওয়ার কথা। অভিযোগ যাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের শুনানিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরে ৭টি পুরসভা রয়েছে। সব ক’টিতেই ভোট আসন্ন। এর মধ্যে মেদিনীপুরে সংরক্ষণের চূড়ান্ত তালিকা আগেই প্রকাশিত হয়েছে। বাকি ৬টি পুরসভার আসন সংরক্ষণের খসড়া তালিকা ১৭ জানুয়ারি প্রকাশিত হয়। পুরসভাগুলো হল খড়্গপুর, ঘাটাল, ক্ষিরপাই, চন্দ্রকোনা, খড়ার ও রামজীবনপুর।
প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, খসড়া তালিকা প্রকাশের দিনই এক নির্দেশে জানানো হয়েছিল, তালিকা নিয়ে কারও কোনও অভিযোগ কিংবা আপত্তি থাকলে তিনি তা ১৭ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারির মধ্যে জানাতে পারেন। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি ওয়ার্ড সংরক্ষণের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হবে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, ‘‘রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফেই এই সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।’’ দেখা গিয়েছে, ৩০ জানুয়ারির মধ্যে সব মিলিয়ে ৪টি অভিযোগ এসেছে। সবক’টিই খড়্গপুর নিয়ে। অভিযোগগুলো কারা করেছেন? প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, একটি অভিযোগ করা হয়েছে বিজেপির তরফে, একটি অভিযোগ করা হয়েছে সিপিএমের তরফে। বাকি দু’টি অভিযোগ যাঁরা করেছেন, তাঁরা নিজেদেরকে কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা কিংবা কর্মী হিসেবে পরিচয় দেননি। সাধারণ মানুষ হিসেবেই পরিচয় দিয়েছেন।
সূত্রের খবর, খড়্গপুরের ১ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে অভিযোগ এসেছে। খসড়া তালিকায় ওয়ার্ডটি তফসিলি উপজাতি মহিলার জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। একাধিকজনের দাবি, এই ওয়ার্ডে তফসিলি উপজাতিভুক্ত মানুষের বেশি বাস নেই। ফলে, ওয়ার্ডটি তফসিলি উপজাতি সংরক্ষিত হতে পারে না। প্রশাসনের এক সূত্রের অবশ্য দাবি, খসড়া তালিকায় ভুল নেই। জেলার ৬টি পুরসভার ক্ষেত্রেই নির্বাচন কমিশনের নির্দিষ্ট ‘রোস্টার’ মেনে ওয়ার্ড সংরক্ষণের তালিকা তৈরি হয়েছে। কমিশনের নির্দেশ মতোই সংরক্ষণের তালিকা তৈরিতে ২০১১ সালের জনগণনাকে ভিত্তি করা হয়েছে। শুনানিতে অভিযোগকারীদের প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা দেওয়া হবে।
খড়্গপুরের ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫টি ওয়ার্ড সংরক্ষিত হয়েছে। মহিলা সংরক্ষিত ১২টি, তফসিলি জাতি ৪টি, তফসিলি উপজাতি একটি। সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায় মানছেন, ‘‘খড়্গপুরের তালিকা নিয়ে কিছু প্রশ্ন রয়েছে। তাই আমরা অভিযোগ জানিয়েছি।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশেরও স্বীকারোক্তি, ‘‘খড়্গপুরের তালিকা দেখে মনে হয়েছে, একাধিক ক্ষেত্রে ঠিকঠাকভাবে আসন সংরক্ষণ হয়নি। তাই আমরা অভিযোগ জানিয়েছি।’’
আর তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি জানান, তালিকা নিয়ে দলের অভিযোগ নেই। এক-দু’টি ওয়ার্ড নিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগ থাকতে পারে।