সাজা ঘোষণার পরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দু’জনকে। ঘাটাল আদালত চত্বরে। নিজস্ব চিত্র।
দাসপুর অ্যাসিড মামলায় দুই মহিলা-সহ চার অভিযুক্তকে দিন কয়েক আগেই দোষী সাব্যস্ত করেছিল ঘাটাল আদালত। বুধবার সেই মামলার রায় শোনালেন ঘাটালের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সঞ্জয় শর্মা।
অভিযুক্ত নন্দ সামন্ত এবং তাঁর স্ত্রী শ্যামলী সামন্তকে যাবজ্জীবনের আদেশ দেন বিচারক। সঙ্গে দু’জনের আর্থিক জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারক। অপর দুই অভিযুক্ত স্বদেশ সামন্ত এবং তার স্ত্রী নমিতা সামন্তকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক। একই সঙ্গে আর্থিক জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারক। একই সঙ্গে মৃতের পরিবারকে ডিস্ট্রিক লিগ্যাল সার্ভিসের মাধ্যমে সরকারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আদেশ দেন বিচারক।
১৮ বছর আগে জমি জমা এবং পারিবারিক গোলমালের জেরে দাসপুর থানার বড়শিমুলিয়া গ্রামে অ্যাসিড হামলার ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছিলেন দাসপুর থানার বড় শিমুলিয়া গ্রামের যুবক রতন সামন্ত। দীর্ঘ দেড় মাস হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার পর কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। মূলত সম্পত্তিজনিত সমস্যা নিয়ে গ্রামের বাসিন্দা রতন সামন্তের সঙ্গে বিবাদ চলছিল অভিযুক্ত নন্দ সামন্ত ও স্বদেশ সামন্তদের। ২০০৪ সালে ২২ জুলাই ভোরের দিকে রতন সামন্ত ঘুম থেকে উঠে গোয়ালঘরের দিকে যাওয়ার সময় অভিযুক্তেরা তাঁর উপর অ্যাসিড ঢেলে দেয়। অ্যাসিডে রতনের মাথা, চোখ, মুখ সহ শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। কলকাতার পিজি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় রতনের স্ত্রী বিভা সামন্ত দাসপুর থানায় মামলা করেন। এতদিন ঘাটাল আদালতে মামলাটি চলছিল।
শনিবার অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। সেই দিন থেকেই চার অভিযুক্ত জেল হেফাজতে ছিলেন। বুধবার রায় শোনানোর আগে অভিযুক্তদের বক্তব্য জানতে চান বিচারক। অভিযুক্ত নন্দ সামন্ত নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন। এরপরই রায় শোনান বিচারক। মামলার সরকারি আইনজীবী তপন ভট্টাচার্য বলেন, “চার অভিযুক্তদের এক মহিলা সহ দু’জনের যাবজ্জীবন এবং বাকি দু’জনের পাঁচ বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।”