প্রতীকী ছবি।
তৈরি হবে ‘খড়্গপুর-শিলিগুড়ি করিডর’। পশ্চিম মেদিনীপুরের ৫টি ব্লকের উপর দিয়ে যাবে নতুন এই জাতীয় সড়ক। আর এই পরিকল্পনা রূপায়ণে প্রয়োজন জেলার প্রায় এক হাজার একর জমি।
প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রস্তাবিত সড়কটির জন্য ইতিমধ্যে সমীক্ষা হয়েছে। ওই ব্লকগুলির কোথায়, কত জমি প্রয়োজন, খতিয়ে দেখা হয়েছে। কতটা খাস জমি রয়েছে, তাও দেখা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের প্রাথমিক প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। ২০২৩ সালেই এই সড়ক তৈরির কাজ শুরু হওয়ার কথা। কিছু দিন আগে জেলাস্তরে এ নিয়ে এক বৈঠকও হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘জেলায় যে পদক্ষেপ করার, করা হচ্ছে।’’
পশ্চিম মেদিনীপুরের উপর দিয়ে দু’টি জাতীয় সড়ক গিয়েছে— ৬ এবং ৬০ নম্বর। নতুন করিডর হলে আরও সহজে, আরও আরামে খড়্গপুর থেকে সড়কপথে শিলিগুড়ি পৌঁছনো যাবে। সময়ও লাগবে অনেক কম। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, পশ্চিম মেদিনীপুরে থাকবে সড়কটির ৫৬.৫ কিলোমিটার অংশ যা জেলার ৫টি ব্লকের ১১৫টি মৌজা ছুঁয়ে যাওয়ার কথা। ওই ব্লকগুলি হল যথাক্রমে—খড়্গপুর-২, মেদিনীপুর (সদর), কেশপুর, চন্দ্রকোনা-১ এবং ২। এর মধ্যে খড়্গপুর-২ ব্লকে রয়েছে ৮টি মৌজা, মেদিনীপুরে (সদর) ১৩টি, কেশপুরে ৫৮টি, চন্দ্রকোনা ১-এ ১৯টি এবং চন্দ্রকোনা ২-এ ১৭টি মৌজা রয়েছে। ওই সূত্রে খবর, সব মিলিয়ে অধিগ্রহণ করতে হতে পারে ৯৩০ থেকে ৯৫০ একর জমি। এর মধ্যে ৮০০ থেকে ৮৫০ একর জমি রায়তি। বাকিটা খাস।
নতুন আইন অনুযায়ী জমি অধিগ্রহণ করা হবে। প্রশাসনিক সূত্রের মতে, ২০১৩ সালের কেন্দ্রের নতুন জমি অধিগ্রহণ আইন মেনে ক্ষতিপূরণের অঙ্ক নির্ধারণ করা হতে পারে। একাধিক বণিক সংগঠন মনে করাচ্ছে, সারা দেশে ৪৪টি ‘আর্থিক করিডর’ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রের। তার মধ্যে ‘খড়্গপুর-শিলিগুড়ি আর্থিক করিডর’ অন্যতম। ‘ভারতমালা’ প্রকল্পে এই ‘আর্থিক করিডর’ গড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ৬ লেনের সড়কের পরিকল্পনা থাকলেও আপাতত না কি ৪ লেনেরই সড়ক হবে। ঘন্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিবেগে যান চলাচল করতে পারবে। সড়কের একাংশ হবে বাইপাস। খড়্গপুরের চৌরঙ্গি থেকে এই সড়ক শুরু হয়ে মুর্শিদাবাদের মোরগ্রাম হয়ে পৌঁছবে শিলিগুড়ি। সব মিলিয়ে ৫১৬ কিলোমিটার সড়ক তৈরি হওয়ার কথা। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকও জানাচ্ছেন, ‘‘প্রস্তাবিত সড়কটি খড়্গপুর থেকে আরামবাগ, বর্ধমান, পলাশি, মালদহ, কিষানগঞ্জ হয়ে শিলিগুড়ির বাগডোগরা পৌঁছবে।’’
প্রস্তাবিত সড়কটিকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের সমান্তরাল জাতীয় সড়ক হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। দেখা গিয়েছে, সর্বত্র নতুন সড়ক করতে হবে না। কিছু জায়গায় রাজ্য সড়কই জাতীয় সড়কে উন্নীত হবে। সম্প্রসারণ করে সেই রাজ্য সড়ককে পাকাপোক্ত করা হবে। প্রাথমিকভাবে ৮২ থেকে ৮৪টি মৌজায় জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। তার প্রস্তুতি সারা হচ্ছে।