সোমবার থেকে স্কুলে স্কুলে মিড-ডে মিলের পরিস্থিতি পরিদর্শন করবে কেন্দ্রের পাঠানো পর্যবেক্ষক দল। ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার কাজকর্ম কেমন চলছে, তা দেখতে যে-ভাবে দল পাঠানো হয়েছিল, সেই ধাঁচেই কেন্দ্রের পাঠানো পর্যবেক্ষক দল আজ, সোমবার থেকে স্কুলে স্কুলে মিড-ডে মিলের পরিস্থিতি পরিদর্শন করবে। এই প্রকল্পে কেন্দ্রের দেওয়া টাকা ঠিকমতো খরচ করা হচ্ছে কি না, তা যাচাই করার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকেরা খতিয়ে দেখবেন, নিত্যদিন যে-খাবার স্কুলপড়ুয়াদের পাতে পড়ছে, তা কতটা পুষ্টিকর। আর সেই জন্যই এক পুষ্টিবিশারদকে রাখা হয়েছে ওই দলের নেতৃত্বে। তিনি হলেন পুষ্টিবিদ্যার অধ্যাপিকা অনুরাধা দত্ত। এ ছাড়াও রয়েছেন বেশ কয়েক জন পুষ্টিবিশেষজ্ঞ, ইউনিসেফের আধিকারিক, রাজ্যের প্রতিনিধিরা।
মিড-ডে মিল প্রকল্পের কাজ দেখতে কেন্দ্রের ১১ জন প্রতিনিধির দল রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতায় এসে পৌঁছেছে। ওই দলের সদস্যেরা কলকাতা বিমাবন্দর থেকে চলে যান নিউ টাউনের একটি হোটেলে। এক সপ্তাহ ধরে তাঁরা রাজ্যের চারটি জেলার বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে মিড-ডে মিলের হালহকিকত খতিয়ে দেখবেন। আজ ওই পর্যবেক্ষকেরা যাচ্ছেন উত্তর ২৪ পরগনার কয়েকটি স্কুলে। পরের কয়েক দিন হাওড়া, উত্তরবঙ্গ এবং সব শেষে কলকাতার কয়েকটি স্কুলে তাঁদের ঘোরার কথা আছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, মিড-ডে মিলের রেজিস্টার খাতা ঠিকমতো লেখা হচ্ছে কি না, কেন্দ্র থেকে আসা পর্যবেক্ষকেরা তা-ও দেখবেন। বিধি অনুযায়ী পড়ুয়াদের মধ্যে খাবার বিতরণের আগে এক জন শিক্ষক বা শিক্ষিকার তা খেয়ে, তার মান পরীক্ষা করে, রেজিস্টার খাতায় লিপিবদ্ধ করার কথা। সেই খাতা পরীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে রান্নাঘরের পরিবেশ, স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে রান্না হচ্ছে কি না, যে-খাবার দেওয়া হচ্ছে, তার মান কেমন— সবই খতিয়ে দেখার কথা পর্যবেক্ষকদের। কেন পড়ুয়াদের একটি অংশ খাবার খায় না, তা-ও খতিয়ে দেখবেন তাঁরা।
অন্য দিকে, মিড-ডে মিলের জন্য কেন্দ্রের বরাদ্দ অর্থ যথাযথ ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে কি না, সেটা যাচাই করা ওই প্রতিনিধিদের অন্যতম মূল লক্ষ্য। খাবারে ব্যবহৃত জিনিসপত্রের বাজারদরও তাঁরা খতিয়ে দেখতে পারেন বলে একটি সূত্রের খবর।
বঙ্গে আবাস যোজনা দুর্নীতির অভিযোগ শুনতে আসা কেন্দ্রীয় দল রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পরিদর্শনে গিয়েছিল। মিড-ডে মিল যৌথ প্রকল্প। তাতে কেন্দ্র দেয় ৬০ শতাংশ টাকা, রাজ্য দেয় ৪০ শতাংশ। মিড-ডে মিলের নয়া নামকরণ হয়েছে ‘পিএম পোষণ’ করা হলেও তার মান উন্নত হচ্ছে না বলে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে চাপান-উতোর চলছেই। রাজ্য সরকারের দাবি, কেন্দ্রের টাকা বাড়ানো উচিত। কেন্দ্রের অভিযোগ, রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের বরাদ্দ ঠিক ভাবে ব্যবহার করছে না। এই প্রকল্পের টাকা নয়ছয় হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু অবশ্য এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।