জখম: অম্বিকেশ মহাপাত্র। ছবি: সামসুল হুদা
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে গিয়ে ক্যানিংয়ে হামলার মুখে পড়লেন ‘আক্রান্ত আমরা’র সদস্যেরা। জখম হয়েছেন সংগঠনের নেতা অম্বিকেশ মহাপাত্র-সহ কয়েকজন। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। যদিও তৃণমলের স্থানীয় নেতৃত্বের পাল্টা অভিযোগ, তাদের লোকজনকে মারধর করেছেন ওই সংগঠনের লোকজন। জখম তৃণমূল কর্মী রাকেশ দেবনাথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মারধরের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ‘আক্রান্ত আমরা’র ৭ জনকে। তাঁদের অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার বিকেলের পর থেকে ক্যানিং থানার সামনে বেশ কিছুক্ষণ ধর্নায় বসেন অম্বিকেশ মহাপাত্র এবং মন্দাক্রান্তা সেন। বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার অরিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘মারামারির ঘটনায় দু’পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছে। দু’পক্ষের কয়েকজন জখমও হয়েছেন। ৭ জনকে গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
কী থেকে বাধল গোলমাল?
ক’দিন আগে বাসন্তীর হেতালখালিতে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মারপিটে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় এক স্কুলছাত্র-সহ ২ জন। ওই ঘটনায় অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের তপু মাহাতো-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। এফআইআর-এ প্রথম নাম তপুর। কিন্তু তাকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
তপুকে গ্রেফতারের দাবিতে বৃহস্পতিবার ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসককে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি নেয় আক্রান্ত আমরা। সেই মতো বুধবার প্রচার চলছিল ক্যানিংয়ে। অভিযোগ, সে সময়েও তৃণমূলের কিছু লোক হামলা চালায় বলে অভিযোগ। জখম হন আক্রান্ত আমরার দু’জন।
রাকেশ দেবনাথ।ছবি: সামসুল হুদা
এই পরিস্থিতিতে উত্তেজনা ছিলই। এ দিন ক্যানিং বাসস্ট্যান্ডের কাছে পথসভার আয়োজন করে আমরা আক্রান্ত। সে সময়ে তাঁদের উপরে তৃণমূলের কিছু লোক এবং কিছু দুষ্কৃতী এসে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। অম্বিকেশবাবু বলেন, ‘‘আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ভেস্তে দিতেই ওরা হামলা চালিয়েছে।’’ অন্য দিকে, তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পরেশরাম দাস বলেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ ক্যানিংকে অশান্ত করতে চাইছিল ওরা। আমাদের দলনেত্রীর নামেও কুৎসা করা হচ্ছিল। প্রতিবাদ করায় মারধর শুরু করে। আমাদের একজনের চোখে গুরুতর চোট লেগেছে। তার প্রতিবাদ করলে ধস্তাধস্তি বেধে যায়। ওদের কেউ কেউ সামান্য চোট পেলেও পেতে পারেন।’’
মারধরের অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি অম্বিকেশবাবু। তাঁর নিজেরও চশমা ভেঙেছে। চোট পেয়েছেন মুখে। ‘আক্রান্ত আমরা’র আর এক সদস্য মইদুল ইসলাম মাথায় চোট পাওয়ায় সিটি স্ক্যান করাতে হয় ক্যানিং হাসপাতালে। অম্বিকেশের কথায়, ‘‘আমরা কাউকে মারিনি। সংখ্যায় সামান্য কয়েকজন ছিলাম। ধাক্কাধাক্কির সময়ে কেউ আঘাত পেয়ে থাকতে পারেন।’’
এ দিনের ‘আমরা আক্রান্ত’র সভার আগাম অনুমতি ছিল না বলে জানাচ্ছে মহকুমা প্রশাসনের একটি সূত্র। তার জবাবে অম্বিকেশবাবু বলেন, ‘‘অনুমতি না থাকলে পুলিশ আমাদের ধরতেই পারত। তা বলে এ ভাবে হামলা হবে?’’
হামলা ও সংগঠনের সাতজনকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে থানার সামনে ধর্নায় বসেন অম্বিকেশবাবু ও মন্দাক্রান্তা। খবর পেয়ে সেখানে আসেন ভারতী মুৎসুদ্দি-সহ কয়েকজন আইনজীবী। রাত ৮টার পরে ধর্না তোলেন অম্বিকেশবাবুরা।