—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
স্যালাইনে রোগীর অবস্থার উন্নতির বদলে অবনতি হচ্ছে কেন, তা বুঝে উঠতে পারছিলেন না রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। বিশদ অনুসন্ধান চালিয়ে তাঁরা দেখেন, নির্দিষ্ট দু’টি ব্যাচের রিঙ্গার ল্যাকটোজ় (আরএল) স্যালাইন থেকেই ঘটছে বিপত্তি। বিষয়টি জেনে বৃহস্পতিবার নদিয়ার ওই হাসপাতালে এসে নমুনা হিসাবে নির্দিষ্ট ওই স্যালাইনের বোতল সংগ্রহ করে নিয়ে যান ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ডের দুই সদস্য।
আর জি করে চিকিৎসক-পড়ুয়ার ধর্ষণ-খুনের পর স্বাস্থ্যক্ষেত্রে যে বিপুল দুর্নীতি ক্রমশ সামনে আসছে, তার অন্যতম— সরকারি হাসপাতালে জাল বা খারাপ মানের ওষুধ সরবরাহের কারবার। রানাঘাট হাসপাতাল সূত্রের খবর, সোমবার হাসপাতালের স্টোরে থাকা ওই স্যালাইন দেওয়ার পরেই পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে বেশ কয়েক জনের কাঁপুনি শুরু হয়। এক চিকিৎসক বলেন, “দেখা যায়, যাঁদের কাঁপুনি হচ্ছে, তাঁদের একই ব্যাচের স্যালাইন দেওয়া হয়েছিল।”
রানাঘাট হাসপাতাল সূত্রের খবর, বছরখানেক আগেও নির্দিষ্ট ব্যাচের আরএল স্যালাইন দেওয়ার পর রোগীর শারীরিক সমস্যার বিষয়টি নজরে এসেছিল চিকিৎসকদের। এক চিকিৎসকের কথায়, “সে বার সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়েছিল ডেঙ্গি রোগী এবং প্রসূতিদের। বেশ কয়েক জন প্রসূতির অবস্থা হঠাৎ এতটাই অবনতি হয়েছিল যে তাঁদের অন্যত্র স্থানান্তরিত করতে হয়।”
এ দিন অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টরস-এর পশ্চিমবঙ্গ শাখার প্রাক্তন সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, “একে বিক্ষিপ্ত ঘটনা হিসাবে না দেখাই ভাল। এর আগে বাঁকুড়া বা উত্তরবঙ্গেও একই জিনিস দেখা গিয়েছে।” নদিয়া জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জ্যোতিষচন্দ্র দাস বলেন, “রানাঘাট হাসপাতালের বিষয়টি জানা মাত্র নির্দিষ্ট দু’টি ব্যাচের স্যালাইন ব্যবহার বন্ধ করে আমরা ড্রাগ কন্ট্রোলে খবর দিই। তারা এসে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছে। পরীক্ষার পরেই বোঝা যাবে সমস্যা কোথায়। সরবরাহকারী সংস্থার গাফিলতি থাকলে স্বাস্থ্য দফতর ব্যবস্থা নেবে।”