—ফাইল চিত্র।
দহনজ্বালায় জ্বলছে গোটা দক্ষিণবঙ্গ। গত কয়েক দিন ধরে উত্তরেও হানা দিয়েছে তাপপ্রবাহ। মালদহ এবং বালুরঘাটে বৃহস্পতিবারও তাপপ্রবাহ হয়েছে। তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রির বেশি। তীব্র দহনে নাজেহাল অবস্থা রাঢ় বাংলার। বৃহস্পতিবার কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সর্বত্রই তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কলকাতার গরম গত ৪৪ বছরের নজির ভেঙে দিয়েছে। শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছে ৪১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। শেষ বার কলকাতায় এপ্রিল মাসে এত গরম পড়েছিল ১৯৮০ সালে। সে বার তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছিল ৪১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
বৃহস্পতিবার রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রার তালিকায় চোখ রাখলে দেখা যাচ্ছে, পুরুলিয়া, পানাগড় বা বাঁকুড়া নয়, তাপের দাপটে সকলকে ছাপিয়ে গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের কলাইকুণ্ডা। সেখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৬.৬ ডিগ্রি বেশি। রাজ্যের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল পানাগড়ে। সেখানে পারদ পৌঁছে গিয়েছিল ৪৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এ ছাড়া, সিউড়িতেও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া দফতরের তালিকা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাজ্যের সাতটি জায়গায় তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলিয়াসের বেশি ছিল। সেগুলি হল মেদিনীপুর (৪২), ডায়মন্ড হারবার (৪২.৩), বাঁকুড়া (৪২.৬), ক্যানিং (৪২), বর্ধমান (৪২), ঝাড়গ্রাম (৪২) এবং ব্যারাকপুর (৪২.৫)। এ ছাড়াও ৪০ ডিগ্রি বা তার বেশি তাপমাত্রা ছিল দমদম (৪১), উলুবেড়িয়া (৪১), কৃষ্ণনগর (৪১.৮), শ্রীনিকেতন (৪০.৬), সল্টলেক (৪১.৬), পুরুলিয়া (৪১.৭), হলদিয়া (৪১.৪), আসানসোল (৪১.৫), বসিরহাট (৪০), বালুরঘাট (৪০.৫) এবং মালদহে (৪১)।
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাজ্যের ১৩টি জায়গায় তাপপ্রবাহ হয়েছে। সেগুলি হল মালদহ, বালুরঘাট, কলকাতা, মেদিনীপুর, কৃষ্ণনগর, সল্টলেক, ক্যানিং, মগরা, বর্ধমান, আসানসোল, ব্যারাকপুর, সিউড়ি এবং ঝাড়গ্রাম। এ ছাড়া পাঁচটি জায়গায় তীব্র তাপপ্রবাহ হয়েছে। সেগুলি হল উলুবেড়িয়া, ডায়মন্ড হারবার, কলাইকুণ্ডা, হলদিয়া এবং পানাগড়।
তীব্র দহনের মাঝে কোনও আশার কথা শোনাতে পারেনি আলিপুর। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী এক সপ্তাহ দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতির খুব একটা পরিবর্তন হবে না। গরমের ‘স্পেল’ আরও দীর্ঘ হতে চলেছে। গত ৫০ বছরে এপ্রিল মাসে এই ধরনের গরম এত দীর্ঘ সময়ের জন্য স্থায়ী হয়নি বলেও জানিয়েছেন আবহবিদেরা।