সব্যসাচী দত্ত।
এ বার বিধাননগর পুরসভায় ইস্তফা দিলেন এক মেয়র পারিষদ। সোমবার বিকেলে সেখানকার মেয়র পারিষদ (ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ) প্রসেনজিৎ সর্দার ইস্তফা দিয়েছেন। যিনি সদ্য প্রাক্তন হওয়া মেয়র সব্যসাচী দত্তের ঘনিষ্ঠ বলেই বিধাননগরের রাজনীতিতে পরিচিত। দিন কয়েক আগে সব্যসাচী নিজেই বিধাননগরের মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। তাঁর বিরোধী শিবিরের মতে প্রসেনজিতের ইস্তফা প্রত্যাশিতই ছিল।
বিদ্যুৎ ভবনে সম্প্রতি সেখানকার কর্মী সংগঠনের সভায় গিয়ে সব্যসাচী এমন কিছু মন্তব্য করেন যা দল বিরোধী বলেই তৃণমূলের উচ্চতরর নেতৃত্ব দাবি করেছিল। এর পরেই পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশে সব্যসাচীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয় বিধাননগর পুরসভায়। সেই অনাস্থা প্রস্তাবে তৃণমূলের ৩৫ জন কাউন্সিলর সই করেছিলেন। এক মাত্র মেয়র পারিষদ প্রসেনজিৎ এবং ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শিবু ভাণ্ডারী সই করেননি।
ইস্তফাপত্র জমা করে প্রসেনজিৎ বলেন, ‘‘সব্যসাচী দত্তের সঙ্গে আমার পারিবারিক সম্পর্ক। ওঁর ইস্তফা দেওয়াটা মানতে পারিনি। তাই ইস্তফা দিলাম।’’ সূত্রের খবর, ইস্তফাপত্রে তিনি চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীকে জানান যে, অনিবার্য পরিস্থিতিতে তিনি ইস্তফা দিয়েছেন। শুধুমাত্র কাউন্সিলর হিসেবে নিজের ওয়ার্ডে উন্নয়নের কাজ করবেন। প্রসেনজিতের ইস্তফাপত্র জমা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী।
নিউ টাউনের মহিষবাথান এলাকায় সিন্ডিকেট চালানোর অভিযোগ ছিল প্রসেনজিতের বাবা সমীর ওরফে ভজাই সর্দারের বিরুদ্ধে। ২০১১-য় রাজ্যে পালাবদলের আগেই সিপিএমের ঘনিষ্ঠ ভজাইকে তৃণমূলের দিকে নিয়ে এসেছিলেন সব্যসাচী। নিউ টাউনে সব্যসাচী ২০১১ সালে জেতেন। সেই সময়ে সিপিএমের বিরুদ্ধে মহিষবাথানে তৃণমূলকে ভোটে লড়তে ভজাইয়ের বাহিনী যথেষ্ট সাহায্য করে বলেই সেখানকার খবর। তার পরে যত বারই ভজাইয়ের বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট চালানোর অভিযোগ উঠেছে, তত বারই প্রকাশ্যে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন সব্যসাচী। সেই সুবাদেই প্রসেনজিৎও ধীরে ধীরে সব্যসাচীর ঘনিষ্ঠ হয়ে যান। ২০১৫ সালে বিধাননগর পুরসভার নির্বাচনে প্রসেনজিৎ মহিষবাথান এলাকায় ২৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হন। প্রার্থী হিসেবে তাঁর টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রেও সব্যসাচীবাবুর অবদান ছিল বলেই অনুগামীদের একাংশের দাবি। তাঁর টিকিট পাওয়া এবং মেয়র পারিষদ হওয়ার পিছনে সব্যসাচীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল সেই সময়ে।
প্রসেনজিতের ইস্তফা প্রসঙ্গে সব্যসাচী দত্ত বলেন, ‘‘দুঃখজনক ঘটনা। উচ্চশিক্ষিত, পরিশ্রমী কাউন্সিলর।’’