ফিরহাদ হাকিম।
সুযোগ পেয়েও যাঁরা ইচ্ছে করে টিকা নেননি, তাঁদের খোঁজ চালাচ্ছে কলকাতা পুরসভা। তবে যাঁরা বাড়ি থেকে বেরোতে অক্ষম বলে টিকা নিতে পারেননি, তাদের সাহায্য করা হবে পুরসভার তরফে। সোমবার কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এই ঘোষণা করেছেন।
ফিরহাদ জানিয়েছেন, এই দ্বিতীয় পর্যায়ভুক্তেরা ৯৮৩০০৪৭৩৯৩-এ হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন। সেখানে আধারকার্ড, ফোন নম্বর এবং পরিবারের যে সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে তার নাম দিলেই টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। মেয়র জানিয়েছেন, শহরের প্রত্যেকে যাতে টিকা পান তা নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ।
রাজ্যে সাম্প্রতিক করোনা স্ফীতির মোকাবিলায় কলকাতা কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা নিয়ে সোমবার একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন ফিরহাদ। বিভিন্ন বয়সের শহরবাসী কী ভাবে টিকা নিতে পারবেন, তার একটি স্পষ্ট নির্দেশিকা তুলে ধরেছেন কলকাতার মেয়র। তিনি জানান, বাড়ি থেকে বার হতে পারছেন না যাঁরা, তাঁদের বাড়ি গিয়ে টিকা দেওয়া হবে। তবে এই টিকা দেওয়া হবে দিনের শেষে বা সন্ধ্যার দিকে— টিকাকেন্দ্রে দিনের বেলার কাজ শেষ হওয়ার পর। টিকা নিতে ইচ্ছুক যিনি, তাঁর এবং চিকিৎসকের সময় এবং সুবিধা অনুযায়ী ঠিক হবে টিকা দেওয়ার দিন ক্ষণ।
এ ছাড়া ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সি যে কোনও শিশু টিকা নিতে পারবে শহরের কোভ্যাক্সিন মেগা সেন্টারগুলি থেকে। যে স্কুলগুলিকে টিকাকরণ শিবির হচ্ছে, সেখানেও টিকা নিতে পারেবেন কমবয়সিরা। ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের পরিচয়পত্র কো-উইন অ্যাপে নথিভুক্ত করালেই টিকা দেওয়া হবে তাদের।
এর পাশাপাশি কলকাতার অধিকাংশ পুর ওয়ার্ডে অতিরিক্ত একটি করে হেল্থ সেন্টার খোলার পরিকল্পনাও আছে কলকাতা পুরসভার। মেয়র জানিয়েছেন এই মুহূর্তে কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডেই পুরসভার প্রাইমারি হেল্থ সেন্টার আছে। ওই সব এলাকায় জায়গা এবং পরিকাঠামো পেলে আরও একটি করে স্যাটেলাইট প্রাইমারি আর্বান হেল্থ সেন্টার বা স্বাস্থ্যকেন্দ্র খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। ফিরহাদ জানিয়েছেন, ১৪০০ বর্গ ফুট জায়গা পেলেই এই দ্বিতীয় স্যাটেলাইট স্বাস্থ্যকেন্দ্র খোলার ব্যবস্থা করবে পুরসভা। অবশ্য এক জায়গায় ১৪০০ বর্গফুট জায়গা না পেলেও হবে। যদি দু’টি তলায় ৭০০ বর্গফুট করে জায়গা পাওয়া যায় তা হলেও নতুন স্বাস্থ্যকেন্দ্র পাবে এলাকা। তবে স্যাটেলাইট স্বাস্থ্য কেন্দ্র খুলবে মূল স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে।
মূলত গরিব মানুষদের পরিষেবা দিতে এবং বড় ওয়ার্ডগুলিতে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগীদের ভিড় এড়ানার জন্যও এই ব্যবস্থা। ফিরহাদ জানিয়েছেন, এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসকের ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। আপাতত শহরের প্রাথমিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি কলকাতা পুরসভা দেখবে। গুরুতর কিছু হলে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য পরিষেবা পেতে রোগীকে সাহায্য করা হবে। প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে কলকাতায় মোট ৩৩টি গণ্ডিবদ্ধ এলাকা (কন্টেনমেন্ট জোন) রয়েছে বলে জানিয়েছেন ফিরহাদ।