ফাইল চিত্র
শেষ পর্যন্ত শিলিগুড়িতে বহালই রইল অশোক-রাজ।
আজ রবিবার মেয়াদ ফুরোচ্ছে শিলিগুড়ি পুরসভার। সোমবার তার প্রশাসক বোর্ড কারা চালাবেন, তা নিয়ে শনিবার দিনভর টানাপড়েন চলল। সন্ধ্যার মুখে রাজ্য সরকার তাদের পুরনোটির পরিবর্তে নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সেখানে দেখা যায়, আগে যে পাঁচ বিরোধী কাউন্সিলরকে বোর্ডে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তা বাতিল করা হয়েছে। বদলে মেয়র অশোক ভট্টাচার্যকে মাথায় রেখে ৬ জন মেয়র পারিষদকে নিয়ে প্রশাসক বোর্ড তৈরির কথা ঘোষণা করা হয় নতুন বিজ্ঞপ্তিতে। তাতে খুশি বাম শিবির। করোনা পরিস্থিতিতে তাঁরা দ্রুত প্রশাসক বোর্ডের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন বলে জানিয়ে দেন।
শুক্রবার রাতে রাজ্যের বিজ্ঞপ্তিতে দেখা গিয়েছিল, অশোককে শীর্ষে রেখে প্রশাসক বোর্ড গড়ার কথা বলা হলেও তাতে পুরসভার বিরোধী তৃণমূলের পাঁচ কাউন্সিলরকে রাখা হয়েছে। মেয়র সেই বোর্ডের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি এবং তাঁর দলের অভিযোগ— কলকাতা-সহ রাজ্যের সব পুরসভার ক্ষেত্রে মেয়র বা চেয়ারম্যান পারিষদদের নিয়ে বোর্ড গড়া হয়েছে। কেবল শিলিগুড়িতে বাম এবং জয়নগরে কংগ্রেস পুরসভার ক্ষমতায় বলে এই দুই ক্ষেত্রে প্রশাসক বোর্ডে তৃণমূলের কাউন্সিলরদের একাংশকে সামিল করা হয়। তাই এর বিরোধিতা করে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান মেয়র এবং জেলা সিপিএম।
এদিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ পুরসভার বিভিন্ন দফতরে গিয়ে কর্মী-আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বিদায়ী মেয়র, পরিষদ সদস্য এবং কাউন্সিলররা। বিরোধী দলনেতার ঘরে বসেও তাঁদের সঙ্গে সৌজন্য কথাবার্তা বলেন। পরে মেয়র বলেন, ‘‘অনেক বাধা নিয়ে এই পুরবোর্ড চালানো শুরু করেছিলাম। আর বাধা নিয়েই আমরা শেষ করছি। তবে শেষেরও শুরু আছে। আমরা আশা করছি শেষেরও একটা শুরু হবে।’’ পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া জানিয়ে দেন, বিজ্ঞপ্তি মতো সোমবার কারা উপস্থিত থাকবেন, সেই রিপোর্ট রাজ্যের কাছে পাঠানো হবে।
কিন্তু এর পরে সন্ধ্যার মুখে রাজ্য সরকারের নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ পেতেই পরিস্থিতি বদলে যায়। তখন মেয়র বলেন, ‘‘শিলিগুড়ির ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী নির্দেশিকাটি আসে। আমরা তা গ্রহণ করতে পারছি না বলে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিলাম। যাই হোক, এত অল্প সময়ের মধ্যে জনমতের চাপে সরকার তা পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হয়েছে। সংশোধিত নির্দেশিকা জারি করেছে। সে জন্য মন্ত্রীকে ধন্যবাদ।’’ এখন যে দায়িত্ব তাদের উপর এসেছে তাতে সংকীর্ণ রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে রাজ্য সরকার এবং বিরোধীদের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। কলকাতার মতো বিরোধী কাউন্সিলরদের কো-অর্ডিনেটর হিসেবে নিয়ে আলোচনা করে কাজ করতে সচেষ্ট হবেন বলেও জানান অশোক।
বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘প্রশাসক বোর্ডকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। ওই বোর্ড রাজ্য সরকারের মনোনীত। সরকারের উন্নয়নমুখী চিন্তাভাবনাকে বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে আমরা পাশে আছি। না হলে গঠনমূলক ভাবে যা বলার, বলব।’’