মঙ্গলবার হাইকোর্টে ম্যাথু। রণজিৎ নন্দীর তোলা ছবি।
কলকাতা পুলিশ তাঁর নামে যে লুক আউট নোটিস জারি করেছে, তা খারিজ করতে আদালতের দ্বারস্থ হলেন নারদ নিউজের কর্ণধার ম্যাথু স্যামুয়েল। মঙ্গলবার তিনি নিজে কলকাতা হাইকোর্টে এসে এ ব্যাপারে মামলা দায়ের করেছেন। নারদ-কর্তার আবেদন, লালবাজারের ওই নোটিসকে আদালত অবৈধ ঘোষণা করুক। ম্যাথুর কৌঁসুলি অরুণাভ ঘোষ জানিয়েছেন, ক’দিন বাদে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের এজলাসে মামলার শুনানি হতে পারে।
নারদ-কাণ্ডের জেরে ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ-মামলা রুজু হয়েছে। ওই স্টিং অপারেশনে দেখা গিয়েছে, শাসকদলের একাধিক নেতা-মন্ত্রী টাকা নিচ্ছেন। ফুটেজের সত্যতা যাচাই করতে নিরপেক্ষ তদন্ত চাওয়া হয়েছে জনস্বার্থ-মামলায়। অন্য দিকে নারদ-ফুটেজে যাঁরা অভিযুক্ত, তাঁদের তরফে মামলায় ম্যাথুকেও জড়ানো হয়েছে।
জনস্বার্থ-মামলাটির শুনানি চলছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি গিরীশ গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চে। অরুণাভবাবুর বক্তব্য: ডিভিশন বেঞ্চ পুজোর আগে জানিয়ে দিয়েছে, জনস্বার্থ-শুনানি চলাকালীন ম্যাথুর বিরুদ্ধে পুলিশি-তদন্তে স্থগিতাদেশ বলবৎ থাকবে। পাশাপাশি স্টিং অপারেশনের প্রতিটি পর্যায় সম্পর্কে ম্যাথুর কাছে বিশদ হলফনামা চেয়েছে কোর্ট, যা ইতিমধ্যে বেঞ্চে জমা দেওয়া হয়েছে বলে অরুণাভবাবুর দাবি।
পুজোর পরে জনস্বার্থ-মামলাটির শুনানি হয়নি। এমতাবস্থায় এ দিন ম্যাথুর নতুন মামলা। তাতে ঠিক কী আবেদন? অরুণাভবাবু জানান, নারদ-কর্তা আদালতকে বলেছেন, তাঁর নামে লুক আউট নোটিস জারির এক্তিয়ার কলকাতা পুলিশের নেই। কীসের ভিত্তিতে নোটিস, তার আইনি ব্যাখ্যাও লালবাজার দিতে পারছে না। অরুণাভবাবুর দাবি, তাঁর মক্কেলের নামে এখানে কোনও ফৌজদারি বা দেওয়ানি মামলা ঝুলে নেই। আদালত ম্যাথুর নামে কোনও গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেনি। অরুণাভবাবু জানান, তাঁর মক্কেল আশঙ্কা করছেন, লুক আউট নোটিস থাকায় দেশে বা বিদেশে যে কোনও বিমানবন্দরে তাঁকে আটক করা হতে পারে। তাই অবিলম্বে সেটিকে বাতিল ঘোষণার আবেদন করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, স্টিং অপারেশন করে তাঁর স্বামীকে ফাঁসানো হয়েছে বলে নিউ মার্কেট থানায় ম্যাথুর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন কলকাতার মেয়রের স্ত্রী। ‘‘কিন্তু প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ইতিমধ্যে ম্যাথুর বিরুদ্ধে পুলিশি তদন্তে স্থগিতাদেশ দিয়েছে।’’— মন্তব্য অরুণাভবাবুর। যাঁর নামে লুক আউট নেটিস, তিনি তো সশরীরে হাইকোর্টে হাজির ছিলেন!
তা সত্ত্বেও কলকাতা পুলিশ ওঁকে আটক করল না কেন? কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) বিশাল গর্গ বলেন, ‘‘ম্যাথুর বিরুদ্ধে তদন্তে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ রয়েছে। তাই ওঁকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি।’’