লালবাজারকে বারবার হাইকোর্ট দেখিয়েই পুলিশের সামনে হাজিরা এড়াচ্ছিলেন নারদ নিউজের কর্ণধার ম্যাথু স্যামুয়েল। গ্রেফতারি এড়ানোর জন্যও তিনি দ্বারস্থ হন উচ্চ আদালতেরই। এ বার যাবতীয় পুলিশি তলব এবং নিম্ন আদালতের নোটিস খারিজ করার জন্য সেই কলকাতা হাইকোর্টেই আবেদন জানালেন নারদ-প্রধান।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নারদ স্টিং অপারেশন নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ। তদন্তকারীরা ম্যাথুকে লালবাজারে তলব করে একাধিক নোটিস পাঠান। কিন্তু ম্যাথু হাজির হননি। সরকারের আলাদা তদন্তের বিষয়টি এর আগে হাইকোর্টে উঠেছিল। উচ্চ আদালত জানিয়েছিল, এ ব্যাপারে শেষ কথা বলবে তারাই। লালবাজারের তলবি ই-মেলের জবাবে ম্যাথু হাইকোর্টের সেই বক্তব্য উল্লেখ করে জানান, বিষয়টি বিচারাধীন। তাই তিনি পুলিশের তলবে হাজিরা দিতে নারাজ।
লালবাজারে হাজির হলেই তাঁকে গ্রেফতার করা হবে, এই আশঙ্কায় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের ডিভিশন বেঞ্চের হস্তক্ষেপ চান তিনি। ডিভিশন বেঞ্চ ম্যাথুর আইনজীবী অরুণাভ ঘোষকে নির্দেশ দেয়, তাঁর মক্কেলের বক্তব্য লিখিত ভাবে আদালতে পেশ করা হোক। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ইতিমধ্যে তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, নারদ-মামলা উচ্চ আদালতে বিচারাধীন থাকাকালীন সেই ব্যাপারে আলাদা তদন্ত করা উচিত নয়।
হাইকোর্ট সূত্রের খবর, বুধবার সন্ধ্যায় ম্যাথুর হলফনামা প্রধান বিচারপতির কাছে পৌঁছয়। ম্যাথু তাতে লিখেছেন, এই মামলা হাইকোর্টের বিচারাধীন। তা সত্ত্বেও কলকাতার পুলিশ কমিশনার, রাজ্যের আর্থিক অপরাধ দমন শাখা এবং নগর দায়রা আদালতের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কী ভাবে তাঁর কাছে হাজিরার নির্দেশ পাঠাচ্ছেন, তিনি তা বুঝতে পারছেন না। ওই তিন কর্তৃপক্ষেরই তলবি নির্দেশ খারিজ করা হোক।
ম্যাথু জানাচ্ছেন, ২৫ জুন আর্থিক অপরাধ দমন শাখা তাঁর কাছে নোটিস পাঠায়। তার পরে আসে সিপি-র নোটিস। কিন্তু কোন অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে হাজিরা দিতে হবে, ওই দু’টি নোটিসে তা উল্লেখ করা হয়নি। হাজিরার কারণ ব্যাখ্যা করা হয়নি নগর দায়রা আদালতের ২০ জুলাইয়ের সমনেও।
ম্যাথুর আইনজীবী আদালতে জানিয়েছিলেন, তাঁর মক্কেল বিদেশে আছেন। ‘ডিপ্লোম্যাটিক চ্যানেল’-এর মাধ্যমে তিনি যোগাযোগ করবেন। এই পরিস্থিতিতেই এ দিন ম্যাথুর হলফনামা পেশ করা হয় ডিভিশন বেঞ্চে। হাইকোর্টে নারদ মামলার শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ৫ অগস্ট। নারদের হুল অপারেশনের ভিডিও ফুটেজ চণ্ডীগড়ের ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য। তার রিপোর্ট এসেছে কি না, এ দিনও তা জানা যায়নি।