ভিডিওয় ম্যাথ্যু স্যামুয়েল
দেড় দশক পরে ফের শিরোনামে ফিরলেন তিনি! তাঁর ‘স্টিং অপারেশনে’র পরিচিত অস্ত্রে ফের তোলপাড় ফেলে দিলেন রাজনীতির অন্দরমহলে।
২০০১ সালের তহলকার ‘অপারেশন ওয়েস্ট এন্ডে’র কান্ডারি ছিলেন সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েল। আর এ বার বিধানসভা ভোটের মুখে পশ্চিমবঙ্গের তাবড় সব নেতা-মন্ত্রী-সান্ত্রীর ঘুষ নেওয়ার বিস্ফোরক কিছু ফুটেজ সামনে আনলেন সেই ম্যাথুই। দাবি করলেন, দু’বছর ধরে এই ‘এক্স ফাইলস’ অভিযান চালিয়েছেন তিনি। ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, নগদ টাকা ঘুষ নিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের তাবড় নেতা-নেত্রী-মন্ত্রীরা। ম্যাথুর কথায়, ‘‘সারদা-দুর্নীতি থেকে প্রথম সূত্র পাই। স্বাভাবিক ভাবেই, শাসক দল হিসেবে তৃণমূলকেই বেছে নিতে হয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ভোটের আগে এই স্টিং অপারেশন সামনে এসেছে বলে অনেকেই একে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ করছে। তবে এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।’’ গত জানুয়ারিতেই এই তথ্য সংগ্রহ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গত ফেব্রুয়ারি মাসেই তহলকার ম্যানেজিং এডিটর-এর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন ম্যাথু। আর আজ, এই দুর্নীতি-বোমা ফাটিয়ে নিজের নিউজ পোর্টাল ‘নারদ নিউজে’র আত্মপ্রকাশ ঘোষণা করলেন তিনি। এই অভিযানে স্যামুয়েলকে সহযোগিতা করেছেন তহলকারই আর এক প্রাক্তন সাংবাদিক অ্যাঞ্জেল আব্রাহাম। নয়া পোর্টালের জন্মলগ্নে অ্যাঞ্জেলের টুইট— ‘নারদ নিউজ বহু স্টিং অপারেশন করেছে। এটি প্রথম ধাপ।’
২০০১ সালে তহলকার বিশেষ সংবাদদাতা ছিলেন ম্যাথু। তাঁর স্টিং অপারেশনের ভিডিও সামনে আসায় সেই সময় চরম বিড়ম্বনায় পড়েন বিজেপি-র তৎকালীন সর্বভারতীয় সভাপতি বঙ্গারু লক্ষ্মণ, তৎকালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জর্জ ফার্নান্ডেজ ও জর্জের দল সমতা পার্টির নেত্রী জয়া জেটলি-সহ আরও কয়েক জন।
ভিডিও প্রকাশের পরে নিজের বয়ানও নিউজ পোর্টালে জানিয়েছেন ম্যাথু। লিখেছেন, বছর তিনেক আগে তিনি কয়েক জন প্রবাসী বন্ধুর উৎসাহে নিজের স্বপ্নের সংস্থা এই পোর্টালের কাজ শুরু করেন। সারদা কেলেঙ্কারির খবর পাওয়ার পর কিছু দিন তিনি পশ্চিমবঙ্গে ছিলেন। সেই সময়ই এই অপারেশনের শুরু। টানা দু’বছর এই অভিযান চালিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন তিনি।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, তহলকা-কাণ্ডের পর দুর্নীতির প্রতিবাদে এনডিএ মন্ত্রিসভা ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তুলে নেন সমর্থন। মন্ত্রিত্বও ছেড়েছিলেন। সেই সময় এনডিএ-র শরিক দলের কয়েক জন নেতাকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে মন্তব্যও করেছিলেন মমতা। পনেরো বছর পরে বদলে গিয়েছে অবস্থান। মমতা এখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। এখন অবশ্য মমতা বলেছেন, এই ‘স্টিং অপারেশন’ আসলে চক্রান্ত!