রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই রাজ্যপাল একক ভাবে সম্প্রতি ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেছিলেন। তার মধ্যে ১০ জন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের এই নির্দেশ পাওয়ার পরে রাজভবনে তাঁদের সম্মতিসূচক চিঠি পাঠিয়েছিলেন।
নিয়ম অনুযায়ী, সেই চিঠির ভিত্তিতে রাজভবন থেকে সম্মতিসূচক চিঠি এলে তবেই অস্থায়ী উপাচার্যদের কাজ শুরু করার কথা। কিন্তু এঁদের মধ্যে অধিকাংশই এখনও সেই সম্মতিসূচক চিঠি পাননি বলেই খবর। ফলে তাঁরা আদৌ অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করতে পারেন কি না, সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সূত্রের খবর, ওই চিঠি না পাওয়ায় এঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জন অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে তাঁদের যে ক্ষমতা, তা কোনও ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করছেন না বা করতে পারছেন না। তার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় কাজও থমকে গিয়েছে।
সূত্রের খবর, রাজভবন ওই সম্মতিসূচক চিঠি একে একে ১০ জন অস্থায়ী উপাচার্যকেই পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। চিঠি পাঠানো শুরুও হয়েছিল। ইতিমধ্যে রাজ্যপালের অস্থায়ী উপাচার্য বাছাইয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে জনস্বার্থ মামলা হয়। তার পরেই রাজভবন ধীরে চলো নীতি নেয়। সূত্রের খবর, মামলার রায়ের জন্য অপেক্ষা করতে চায় রাজভবন। কিন্তু মামলাটি পরবর্তী শুনানির জন্য এখনও ওঠেনি।
রাজ্যপালের বাছাই করা অস্থায়ী উপাচার্যদের মধ্যে সম্মতিসূচক চিঠি যাঁরা এখনও পাননি, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অমিতাভ দত্ত। তিনি আগে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য ছিলেন। সূত্রের খবর, তিনি এখন সহ-উপাচার্য হিসাবেই কাজ চালাচ্ছেন।
এই রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে জাতীয় শিক্ষা নীতি অনুসারী চার বছরের স্নাতক পাঠ্যক্রম চালু হতে চলেছে। বিষয়টি বাস্তবায়িত করতে গেলে খুব দ্রুত প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেগুলেশন বা নিয়ম বদল করতে হবে। এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির বৈঠক ডাকা প্রয়োজন। এই বৈঠক ডাকেন উপাচার্য। ফলে যাদবপুরে তা এখনও ডাকা যায়নি। অমিতাভ রাজভবনের সম্মতিপত্র না পাওয়ায় সেই কাজে অগ্রসর হতে পারছেন না বলেই খবর। একই পরিস্থিতি কল্যাণী-সহ অন্য কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়েও। তার মধ্যে রাজ্যপাল মনোনীত এই সব অস্থায়ী উপাচার্যদের বেতন ও ভাতা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।