—প্রতীকী চিত্র।
সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ায় আগামী ২০২৪ সালে বহু বেসরকারি বাস বাতিল হয়ে যেতে পারে। এমনটা হলে বেসরকারি গণপরিবহণে ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে। এমনই আশঙ্কা করছেন পশ্চিমবঙ্গের বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলি। ২০০৯ সালের অগস্ট মাসে কলকাতা হাইকোর্ট একটি রায়ে বলেছিল, ১৫ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে কোনও বাস কলকাতা শহরে চালানো যাবে না। পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত একটি মামলায় এই রায় দিয়েছিল হাই কোর্ট। সেই থেকেই এই রীতি চলে আসছে। কিন্তু বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলির দাবি, সেই নিয়মের যাঁতাকলে পড়ে এ বার রাজ্যজুড়ে বহু বাস আগামী বছর বাতিল হতে চলেছে। যার সরাসরি প্রভাব রাজ্যের জনজীবনে পড়বে।
এই অবস্থায় রাজ্য সরকার সঠিক কোনও পদক্ষেপ না নিলে, রাজ্যজুড়ে পরিবহণ পরিষেবা পেতে ভোগান্তি পোয়াতে হবে রাজ্যবাসীকে। বেসরকারি বাস মালিকদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় পূর্ত সড়ক ও পরিবহণমন্ত্রী নীতীন গডকড়ী দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে ডিজেল চালিত গাড়ি তুলে দেওয়ার কথা বলছেন। সঙ্গে বায়ো ডিজেল বা ইলেক্ট্রিক বাস চালানোর পক্ষে সওয়াল করছেন। কিন্তু দেশে সেই প্রযুক্তিতে গাড়ি চালানোর পরিকাঠামো এখনও তৈরি নয়। তাই তিনি বার বার এমন কথা বলায় বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। আদালতের নির্দেশ কার্যকর করা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বার বার বিবৃতির কারণে বেসরকারি বাস মালিকেরাও এখন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তাই তাঁরা পরিকাঠামো তৈরির আগে তড়িঘড়ি কোনও পদক্ষেপ নিতে নারাজ। তবে আগামী বছর অনেক বাস একসঙ্গে বসে যাওয়ায় ব্যবসার ক্ষতিও দেখছেন তাঁরা। তাই পরিবহণ দফতর যেন তাঁদের বিষয়ে আলাদা ভাবে ভাবনাচিন্তা করে, এমনটাই চাইছেন বাস মালিকেরা।
একাংশ বাস মালিকদের যুক্তি, ১৫ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার কারণে আগামী বছর যে সব সরকারি এবং বেসরকারি বাস বাতিল হচ্ছে, কোভিড সংক্রমণের সময় প্রায় দু’বছর সেই বাসগুলি চলেনি। তাই বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে সেই বাসগুলিকে কমপক্ষে আরও দু’বছর সময় দেওয়া হোক। তাতে এক দিকে করোনাকালে যে আর্থিক ধাক্কা বেসরকারি পরিবহণ খেয়েছে, তার থেকে বেরিয়ে আসা যাবে। তেমনই, বিকল্প জ্বালানির যানবাহন রাস্তায় নামানোর পরিকাঠামো তৈরি করার সময়ও পাওয়া যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে দূষণ কম হয়, এমন প্রযুক্তির ব্যবহার বাসে করার কথাও বলছেন বাস মালিকেরা।
এই সংক্রান্ত দাবি নিয়ে জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের তরফে গত এপ্রিল মাস থেকে পরিবহণ দফতরকে চারটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার কোনও উত্তর পাননি বলেই জানিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এক সঙ্গে সরকারি এবং বেসরকারি বাস রাস্তা থেকে উঠে গেলে পরিবহণ পরিষেবা যে কতটা ভেঙে পড়তে তা আমাদের সবারই ভাবা উচিত। আমি বার বার পরিবহণ দফতরকে এ বিষয়ে উদ্যোগী হতে অনুরোধ করে চিঠি দিয়েছি। আমাদের আশা আগামী বছর যে পরিস্থিতি আমাদের জন্য অপেক্ষা করে আছে, তা থেকে যেন পরিত্রাণের উপায় আমরা বের করতে পারি।’’