প্রতীকী ছবি।
দেশের সব থানায় এবং সিবিআই-সহ তদন্তকারী সংস্থায় ক্লোজ়ড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এ রাজ্যের বহু থানাতেই এখনও সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। এমনকি খাস কলকাতার কয়েকটি থানাতেও এত দিন ক্যামেরা ছিল না। সম্প্রতি মল্লারপুরের থানার ভিতরে এক নাবালকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলায় হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ টন্ডন ও বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের কাছে থানার ভিতরে সিসিটিভির তথ্য চেয়েছিল। তাতেই এই কথা বলা হয়েছে। লালবাজার সূত্রের খবর, নেতাজিনগর, কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স-সহ কয়েকটি থানায় বৃহস্পতিবার তড়িঘড়ি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
বহু সময়েই পুলিশি হেফাজতে অভিযুক্তদের উপরে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। আদালতে কিংবা মানবাধিকার কমিশনে সেই অভিযোগ প্রমাণ না-হওয়ার পিছনে সিসিটিভি ক্যামেরার অনুপস্থিতি বড় কারণ বলে মনে করেন আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীরা। ২০১৮ সালেই সুপ্রিম কোর্ট এই নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তা পালন করেনি বহু রাজ্য। সম্প্রতি পঞ্জাবে পুলিশ হেফাজতে এক ব্যক্তিকে নির্যাতনের মামলায় সে কথাই ফের বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। একই প্রসঙ্গ উঠেছিল কলকাতা হাইকোর্টে মল্লারপুরের মামলাতেও। সেখানে চোর সন্দেহে পাকড়াও করা এক নাবালককে থানার ভিতরেই গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় মেলে। কী ভাবে তার মৃত্যু হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই সিসিটিভির প্রসঙ্গ ওঠে।
আদালত সূত্রের খবর, ওই মামলায় রাজ্য যে হলফনামা দিয়েছে তাতে রাজ্যের ৫৪৩টি থানার মধ্যে ‘কয়েকটি’ থানায় সিসিটিভি নেই বলে জানানো হয়েছে। এর পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের ১২টি থানায় সিসিটিভি বসানোর ‘কাজ চলছে’ বলেও জানানো হয়েছিল। তবে পুলিশের অনেকে বলছেন, বহু থানাতেই দু’-একটি জায়গায় নাম-কা-ওয়াস্তে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়। তাতে ‘সাপও মরে, লাঠিও ভাঙে না’। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট এ বার স্পষ্ট জানিয়েছে, থানার ঢোকা-বেরোনোর পথ ছাড়াও এসআইদের ঘর, ওসির ঘর, লক-আপ-সহ বিভিন্ন জায়গায় নাইট ভিশন সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে হবে। এ রাজ্যে কতগুলি থানায় নাইট ভিশন ক্যামেরা রয়েছে তা অবশ্য জানা নেই পুলিশকর্তাদেরই। তাই আদালতের নির্দেশ এ বারেও পালন হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে।