COVID-19

রোদে পুড়ে টিকার লাইনে

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই দুই জেলাতেই ভ্যাকসিন নেওয়ার হিড়িক পড়েছে। কিন্তু জোগান যত, চাহিদা তার ঢের বেশি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া-উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২১ ০৮:২৪
Share:

অপেক্ষা: কাঠফাটা রোদে ভ্যাকসিন নেওয়ার লাইন। ধনেখালি গ্রামীণ হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

কোথাও ভোর চারটে থেকে লাইন। কোথাও তারও খানিক আগে। যত সময় গড়াচ্ছে সেই লাইন দীর্ঘতর হচ্ছে। কাঠফাটা রোদ অগ্রাহ্য করেই দাঁড়িয়ে থাকছেন প্রৌঢ় থেকে বৃদ্ধ— সকলেই। অপেক্ষা— এক ডোজ় ভ্যাকসিনের।

Advertisement

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই দুই জেলাতেই ভ্যাকসিন নেওয়ার হিড়িক পড়েছে। কিন্তু জোগান যত, চাহিদা তার ঢের বেশি। তাই বৈশাখের খর রোদে গলদঘর্ম হয়েও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকছেন সকলে।

সাধারণ মানুষকে কেন এত কষ্ট সহ্য করে টিকা নিতে হবে, সেই প্রশ্ন তুলে অপেক্ষমাণ জনতার মাথার উপরে ছাউনির ব্যবস্থার দাবিতে শুক্রবার ধনেখালি ব্লক স্বাস্থ্য দফতরে স্মারকলিপি দিয়েছে সিপিআই (এমএল) লিবারেশন।

Advertisement

ধনেখালি গ্রামীণ হাসপাতালে দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হচ্ছে। এ দিন সেখানে ভোর থেকে লাইন পড়ে। ভ্যাকসিনের আশায় রোদ উপেক্ষা করেই কয়েকশো লোককে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। অনেকেই মাস্ক পরছেন না। শিকেয় উঠছে দূরত্ববিধি। লিবারেশনের এরিয়া সম্পাদক সজল অধিকারী বলেন, ‘‘মানুষের মাথায় ছাউনি নেই। ভোটে ছাউনির ব্যবস্থা হয়, আর ভ্যাকসিনের সময় হয় না কেন? টিকাকরণ কেন্দ্রে মাস্ক, স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থাও করতে হবে। কবে প্রথম ডোজ় চালু হবে, অবিলম্বে স্বাস্থ্য দফতরকে
জানাতে হবে।’’

ভিড়ের ছবিটা তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালেও কার্যত এক। ভ্যাকসিন নিতে আসা তপনকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘ভোর ৪টে থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে। গত মঙ্গলবার এসে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে শুনি ৩০০ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়ে গিয়েছে। তাই আজ ভোরই লাইন দিয়েছি।’’

আরামবাগ মহকুমার বিভিন্ন টিকাকরণ কেন্দ্রের সামনেও ভিড় থাকছে। অনেকেই এসে প্রথম ডোজ় দেওয়ার আর্জি জানাচ্ছেন। এ দিন মহকুমার ৬টি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক হাজার ডোজ় করে ভ্যাকসিন এসেছে। স্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এখন শুধু দ্বিতীয় ডোজ়ের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নেওয়া হয়েছে। তবে, ষাটোর্ধ্বরা প্রথম ডোজ়ের জন্য এলে তাঁদের কিছু জনকে দেওয়া হচ্ছে।

ভ্যাকসিন সরবরাহের ঘাটতি কবে কাটবে, তা নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরও অন্ধকারে। হুগলি জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের, শুক্রবার সন্ধে পর্যন্ত জেলায় প্রায় ১৮ হাজার মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। প্রায় সবই দ্বিতীয় ডোজ়। ভ্যাকসিনের অপ্রতুলতা নিয়ে জেলার সর্বত্রই ক্ষোভ-বিক্ষোভ রয়েছে বলে স্বাস্থ্যকর্তারা মানছেন।

সাড়ে ১০টা থেকে টিকা দেওয়া শুরু হলেও গত কয়েক দিন ধরে চুঁচুড়ার মল্লিককাশেম হাটে পুরসভা পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাকভোর থেকেই ভিড় জমছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভ্যাকসিন শেষ হয়ে যাওয়ায় অপেক্ষারত মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন। বেগতিক বুঝে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের গেট বন্ধ করে দিতে হয়। এখানে পুর-কর্তৃপক্ষ ঠিক করেছেন, সকাল সাড়ে ন’টা থেকে টোকেন দেওয়া হবে। তিনশো জনকে প্রথম এবং তিনশো জনকে দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হবে।

হাওড়াতেও ভ্যাকসিনের জোগান স্বাভাবিক হয়নি। গড়ে প্রতি দিন ১২ হাজার ভ্যাকসিন আসছে। অথচ প্রয়োজন ২৫ হাজার করে। মজুত ভ্যাকসিনে মূলত দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া যাচ্ছে। প্রথম ডোজ় পাচ্ছেন খুব কম মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement