Rice Mandi

সরকারি পোর্টালে নাম তুলতে ‘টাকা’, ওরা কারা মান্ডিতে! ধান বিক্রি করতে গিয়ে বিপাকে

বিনে পয়সায় সেই কাজ তাঁরা করতে নারাজ। দর হাঁকছেন ২০০, ৩০০, এমনকি ৫০০ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু কিসান মান্ডিগুলিতে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করার জন্য বিনা খরচে কৃষকদের নাম পোর্টালে তোলার কথা।

Advertisement

গৌর আচার্য  , মেহেদি হেদায়েতুল্লা

রায়গঞ্জ ও চাকুলিয়া শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:০২
Share:

—প্রতীকী ছবি।

ধান বিক্রির জন্য কৃষকদের নাম পোর্টালে তুলতে হবে। কিন্তু সব কৃষক তো সেই কাজে দড় নন। তাঁদের ‘সাহায্য’ করতে তাই কিসান মান্ডিতে হাজির কয়েক জন। কারও হাতে ল্যাপটপ, কারও বা ট্যাব। তবে বিনে পয়সায় সেই কাজ তাঁরা করতে নারাজ। দর হাঁকছেন ২০০, ৩০০, এমনকি ৫০০ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু কিসান মান্ডিগুলিতে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করার জন্য বিনা খরচে কৃষকদের নাম পোর্টালে তোলার কথা। তা হলে ওঁরা কারা?

Advertisement

উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের কৃষক মজিবুর রহমানের অভিযোগ, ‘‘ওরা দালাল।’’ সোমবার মজিবুর সহায়ক দরে ধান বিক্রির জন্য নাম নথিভুক্ত করতে হেমতাবাদ কিসান মান্ডিতে গিয়েছিলেন। সেখানে পোর্টালে নাম তুলতে তাঁর কাছে ৭০০ টাকা চাওয়া হয় বলে অভিযোগ। মজিবুর দেননি। বলেন, ‘‘খাদ্য দফতরে অভিযোগ জানিয়েছি।’’ তাঁর মতো জেলার আরও অনেক চাষির অভিযোগ, কিসান মান্ডিতে গিয়ে ধান বিক্রির জন্য খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করতে দালাল-চক্রের খপ্পরে পড়তে হচ্ছে। জেলার ন’টি ব্লকের কিসান মান্ডিগুলিতে বিনা খরচে ওই পরিষেবা মিলবে বলে সরকারি প্রচার চলছে। কিন্তু সব জায়গাতেই রয়েছে ‘বহিরাগতদের’ দাপট। তাদের এড়িয়ে পোর্টালে নাম তুলতে গেলে, ঝামেলায় পড়তে হবে বলে ভুল বোঝানো হচ্ছে বলে দাবি। জেলা খাদ্য ও সরবরাহ আধিকারিক সঞ্জীব হালদার বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তবে দফতরের কর্তাদের একাংশ বলছেন, কিসান মান্ডি চত্বরের বিস্তৃত এলাকায় কে, কী করছে, তা দেখার মতো লোকবল তাঁদের নেই।

সরকারকে ধান বেচতে চাওয়া চাষিদের ‘সমস্যা’ আরও রয়েছে। জেলায় মাঝেমধ্যেই দিনের বেশির ভাগ সময়ে খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের ‘সার্ভার’-এ বিভ্রাট থাকছে বলে অভিযোগ। কৃষকদের দাবি, রাতের বেলায় কিছু সময়ের জন্য ‘সার্ভার’ ঠিক থাকছে বলে তাঁরা খবর পাচ্ছেন। কিন্তু রাতে তাঁরা কোথায় গিয়ে নাম তুলবেন! ফলে, কিসান মান্ডি-সহ বিভিন্ন সাইবার কাফেতে গিয়েও তাঁরা ধান বিক্রির জন্য সরকারি পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করতে পারছেন না বলে অভিযোগ। সেই সুযোগে ফড়েরা দ্রুত ধান কেনার প্রলোভন দেখিয়ে সরকারি সহায়ক দরের থেকে কম টাকায় ধান কিনে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ।

Advertisement

চাকুলিয়ার কৃষক মহম্মদ সামিম আলমের দাবি, ‘‘নাম তুলতে গিয়ে রোজই শুনি, সার্ভার-বিভ্রাট। তার জেরে, এখনও ধান বিক্রির জন্য নিজের নাম তুলতে পারিনি।’’ জেলা খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের দাবি, ‘সার্ভার-বিভ্রাট’-এর বিষয়টি রাজ্য স্তরে জানানো হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement