মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
রাজনৈতিক প্রস্তুতির পাশাপাশি লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজও শুরু করে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। লোকসভায় কমবেশি ২৮টি অর্থাৎ দুই-তৃতীয়াংশ আসনে ‘নতুন মুখ’ নিয়ে দলের অন্দরে আলোচনা শুরু হয়েছে। দলের প্রার্থী-তালিকায় এ বার বিনোদন দুনিয়ার বহর কমানোর সঙ্গে বেশ কয়েক জন পরিচিত সাংসদকে জায়গা দেওয়া নিয়েও পর্যালোচনা চলছে। তবে এখনও পর্যন্ত ভাবনা প্রাথমিক পর্যায়ে। দলের ওই প্রস্তাব অবশ্য চূড়ান্ত করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।
পঞ্চায়েত ভোটের মতো লোকসভা ভোটেও দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ে ‘নতুন তৃণমূল’-এর ছায়া পড়তে চলেছে, সাংগঠনিক স্তরে প্রাথমিক চর্চায় তেমন আভাসই রয়েছে। এই আলোচনায় উল্লেখযোগ্য হতে চলেছে টলিউডের প্রতিনিধিত্ব। অভিনয় জগতের তারকা দুই সাংসদকে এ বার আর প্রার্থী করতে চাইছে না তৃণমূল। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘জনপ্রতিনিধি হিসেবে এই দুই অভিনেতার সক্রিয়তা নিয়ে তাঁদের নির্বাচনী এলাকায় দলের নেতা-কর্মীদের প্রশ্ন রয়েছে। তা ছাড়া, রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্কহীন কিছু বিষয় থাকায় দলকে তাঁদের আবার মনোনয়নের প্রশ্নে ভাবতে হচ্ছে।’’
অভিনয় জগতের আর এক তারকার ভূমিকা নিয়ে তৃণমূলের অভিজ্ঞতা ‘সন্তোষজনক’ নয়। তাঁর সঙ্গে ‘বিতর্কহীন দূরত্ব’ চাইছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। এই তিনটি আসনেই ‘নতুন মুখ’ নিয়ে আলোচনা অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। তবে অভিনয় জগতের সঙ্গে যে হেতু দলনেত্রী মমতার সরাসরি সম্পর্ক আছে, তাই তিন আসনের অন্তত একটিতে প্রার্থী বদল এখনও চূড়ান্ত নয়। এই তালিকায় অবশ্য আসানসোল নেই। বিদায়ী সাংসদ এ বারেও প্রার্থী হতে চাইলে এই কেন্দ্রে বদলের ভাবনানেই তৃণমূলের।
এ ছাড়াও এ বারের প্রার্থী নিয়ে চর্চায় অন্য সাংসদদের মধ্যে কারা মনোনয়ন পাবেন না, তৃণমূলে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে সেই বিষয়টি। এই আলোচনাতেও রয়েছে কমবেশি ৯-১০টি আসন। তার মধ্যে একাধিক পরিচিত সাংসদের কেন্দ্রও রয়েছে। সূত্রের খবর, সংখ্যায় অল্প হলেও কয়েকটি আসনের জন্য রাজ্য মন্ত্রিসভার দু’-এক জন সদস্যের কথাও ভাবা হয়েছে। এ সব ক্ষেত্রে প্রার্থী বাছাইয়ে গত বিধানসভা নির্বাচন ও পঞ্চায়েত ভোটের ফলও মাথায় রাখছেন দলীয় নেতৃত্ব।
পাশাপাশি, ২০১৯ সালের যে ১৮টি কেন্দ্রে তৃণমূল হেরে গিয়েছিল, তার বেশির ভাগ আসনেই এ বার নতুন মুখের সন্ধান চলছে। হাতেগোনা দু’-এক জন ফের মনোনয়ন পেতে পারেন। তবে সব ক্ষেত্রেই পরাজিতদের গত পাঁচ বছরে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক ‘সক্রিয়তা’ বিবেচনায় রাখা হচ্ছে। দলীয় নেতৃত্বের হাতে নানা ভাবে আসা প্রস্তাব খতিয়ে দেখার কাজ চলছে।