পৌষমেলার জটিলতা কাটার পরে জোরকদমে শুরু হয়েছে স্টল তৈরির কাজ। নিজস্ব চিত্র
এখন জট কাটলেও পৌষমেলা নিয়ে দীর্ঘ দিনের চাপানউতোরে গতি আসেনি হোটেল, লজের বুকিংয়ে। অন্য বার মেলার দু’মাস আগেই বোলপুর, শান্তিনিকেতনের হোটেল, লজগুলিতে বুকিং শুরু হয়ে যায়। ব্যতিক্রম হল এ বারই।
বোলপুর ও শান্তিনিকেতনে সব মিলিয়ে ১৫০টির মতো লজ ও হোটেল রয়েছে। প্রতি বছর ২৩ ডিসেম্বর থেকে পৌষমেলা শুরু হয়ে যায়। ভাঙা মেলা নিয়ে উৎসব চলে ৬ থেকে ৭ দিন। প্রতি বছরের মতো এ বছরও পৌষমেলা উপলক্ষে বোলপুর ও শান্তিনিকেতনে প্যাকেজ তৈরি করেছেন লজ ও হোটেল মালিকেরা। সেই মতো মেলা শুরুর দিন থেকে তিন দিনের একটি প্যাকেজ এবং প্রথম তিন দিনের পর থেকে যত দিন মেলা চলবে, তত দিনের প্যাকেজ রাখা হয় হোটেল ও লজ মালিকদের তরফ থেকে।
পৌষ উৎসবে লজ ও হোটেলের প্যাকেজ এ বারও নানা রকমের। শান্তিনিকেতনে তিন দিনের প্যাকেজে কোথাও ডবল বেডের একটি সাধারণ মানের ঘরের ভাড়া ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা, আবার ফোর বেডের ভাড়া ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা। সোনাঝুরির কাছে গ্রামীণ পরিবেশের মধ্যে গড়ে ওঠা লজের ভাড়া বেশি। সেখানে তিন দিনের জন্য ডাবল বেডের একটি ঘরের ভাড়া ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা। চার বেডের একটি ঘরের ভাড়া ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা। পৌষমেলা বা বসন্ত উৎসব ছাড়া অন্য সময়ে এ সব ঘরের ভাড়া থাকে ১৫০০ থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে। প্রতিবার এই প্যাকেজ নিয়ে বিভ্রান্তিতেও পড়তে হয় পর্যটকদের। এই সময় বেশি টাকা দিয়েও ঘর পাওয়া যায় না।
এ বার পৌষমেলা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। একই সঙ্গে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে জায়গায় জায়গায় অশান্তিতে পরিবহণ ব্যবস্থা ব্যহত হয়ে রয়েছে। কিছু হলেও তার প্রভাব পড়েছে এ বারের পৌষমেলায়। পৌষমেলা উপলক্ষে দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা মেলা দেখতে আসেন শান্তিনিকেতনে। স্থানীয় এক লজের কর্মী রাজু হাজরা বলেন, ‘‘অন্য বার পৌষমেলার আগে এই সময় একটিও ঘর খালি থাকে না। কিন্তু, এই বছর এখনও বেশ কিছু ঘর বুক হয়নি।’’ ব্যবসায়ীদের তথ্য বলছে, এখনও পর্যন্ত বোলপুরে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশের মতো লজ ও হোটেল পৌষমেলার জন্য বুকিং হয়েছে।
মঙ্গলবার মেলা নিয়ে জটিলতা কাটার পরে ফের বুকিং শুরু করেছে লজ ও হোটেলগুলি। বোলপুরের লজ মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রসেনজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘‘দেশ-বিদেশ থেকে পৌষমেলার সময় পর্যটকেরা শান্তিনিকেতনে আসেন। এই সময় পর্যটকদের সুবিধার জন্য প্যাকেজ করা হয়। মেলা নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে এ বার বেশির ভাগ লজ সম্পূর্ণ বুকিং হয়নি। অন্য বার এই সময় ঘর পাওয়া যায় না। এ বার এখনও জানি না মেলার আগে লজগুলি সম্পূর্ণ ভর্তি হবে কিনা।’’