Journalist Debmalya Bagchi Arrest

দেবমাল্যের পাশে সাংবাদিকেরা, চিঠি অধীরেরও

পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল শহরের বিদ্যাসাগর মাঠে এ দিন দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। দেবমাল্যের গ্রেফতারের প্রতিবাদে সরব হন তিনিও।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:২৩
Share:

অধীর চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।

Advertisement

আনন্দবাজার পত্রিকার সাংবাদিক দেবমাল্য বাগচীর গ্রেফতারের প্রতিবাদ চলল রবিবার দিনভর। পথে নেমেছেন সাংবাদিকেরা। দেবমাল্যের মুক্তির দাবিতে সরব হয়েছে নাগরিক মঞ্চ। থেমে নেই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। প্রশাসনকে বিঁধেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও।

এ দিন পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া শহরে যৌথ কর্মসূচিতে শামিল হয়েছিল সাংবাদিকদের সংগঠন ‘ইউনাইটেড জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন’ এবং পাঁশকুড়ার নাগরিক সমাজ। ঘটনার নিন্দা করার পাশাপাশি অবিলম্বে দেবমাল্যের মু্ক্তির দাবি জানানো হয়। এ দিন পাঁশকুড়া ব্লক অফিসের সামনে থেকে প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়। মিছিল এসে থামে পাঁশকুড়া পুরাতন বাজারে। সেখানে একটি পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। পথসভা শেষ মিছিল গিয়ে পৌঁছয় পাঁশকুড়া থানায়। পাঁশকুড়া থানার সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন সংগঠনের সদস্যেরা। তারপর পাঁশকুড়া থানার আইসি আশিস মজুমদারের হাতে পাঁচ দফা দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয়। ‘ইউনাইটেড জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনে’র সভাপতি নিশীথকুমার ফদিকার বলেন,‘‘অবিলম্বে দেবমাল্য বাগচীকে মুক্তি দিতে হবে। তাঁর বিরুদ্ধে আনা সমস্ত মিথ্যে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে হবে। না হলে আমরা আবার পথে নামব।’’

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা অধীর চৌধুরীর চিঠি। — নিজস্ব চিত্র।

পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল শহরের বিদ্যাসাগর মাঠে এ দিন দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। দেবমাল্যের গ্রেফতারের প্রতিবাদে সরব হন তিনিও। শুভেন্দু বলেন, ‘‘দেবমাল্যকে মিথ্যা মামলায় জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে। এখনও দেবমাল্য মেদিনীপুর জেলে রয়েছেন। নির্ভীক ও সাহসী সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে প্রায় জরুরি অবস্থার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছেন এটাই তার প্রমাণ।’’ প্রসঙ্গত, দেবমাল্যের গ্রেফতারের পর এক্স হ্যান্ডলে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন শুভেন্দু। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরও দেবমাল্যের গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানিয়ে এবং অবিলম্বে হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করে এ দিন চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। তিনি চিঠিতে লিখেছেন, ‘গত ২৭ অগস্ট আনন্দবাজার পত্রিকার খড়গপুর সংস্করণে সাঁজোয়াল এলাকায় বেআইনি চোলাই মদের ব্যবসার কথা তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। একটি গণতান্ত্রিক দেশে কেন এবং কীভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এত লঙ্ঘিত হবে, তা আমার কাছে বিস্ময়ের’। অধীর চিঠিতে এ-ও লিখেছেন, ‘দেবমাল্য বাগচীর গ্রেফতার ভারতের রাজনীতিতে ভুল বার্তা দেবে। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভকে রক্ষার জন্য যা করা দরকার, তা করার জন্য আপনাকে অনুরোধ করছি।’’ পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যম হল গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ। সেই স্তম্ভে আঘাত এলে গণতন্ত্রই অরক্ষিত হয়ে পড়ে। সেই কথা মনে করিয়েই সাংবাদিকের মুক্তির জন্য মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর সরকারের সক্রিয়তা দাবি করেছি।’’

কংগ্রেস ও বিজেপির অবস্থান প্রসঙ্গে শাসক দলের প্রতিক্রিয়া জানতে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘আমি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’ দেবমাল্যর গ্রেফতারির প্রতিবাদে সরব হয়েছে ‘সেভ ডেমোক্রেসি ফোরাম’। এই সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শীঘ্রই সংগঠনের এক প্রতিনিধি দল খড়্গপুরে আসবে। প্রতিবাদ কর্মসূচি করা হবে। ফোরামের তরফে চঞ্চল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’’ সরব হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেসও। জেলা কংগ্রেস সভাপতি সমীর রায় বলেছেন, “ভয়ানক ঘটনা। গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ সংবাদমাধ্যম। পুলিশের ভূমিকাকে ধিক্কার।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement