মালদহের শিবিরে মহিলাদের ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।
দুয়ারে সরকার শিবিরে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের ফর্ম তুলতে গিয়ে চরম বিশৃঙ্খলা জেলায় জেলায়। সোমবার ওই ফর্ম তোলা ঘিরে হুড়োহুড়ি, হাতাহাতি, লুঠপাটের মাঝে পড়ে আহত হলেন মহিলা-সহ মোট ১৩ জন। শিশু-সহ বেশ কয়েক জন অসুস্থও হয়ে পড়েন। অভিযোগ, নিয়মের গেরোয় প়ড়েই এই বিশৃঙ্খলা হয়েছে। যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করে শাসকদলের দাবি, মানুষ যাতে সমস্যায় না পড়েন, সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, সোমবার শিবিরের প্রথম দিনে মালদহে মহিলা-সহ অন্তত আট জন আহত হন। এ ছাড়া, হুগলি জেলায় তিন এবং পূর্ব বর্ধমানে দু’জন আহত হয়েছেন।
নির্বাচনের আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন। সোমবার থেকেই সেই প্রকল্পের ফর্ম দেওয়া শুরু হয় দুয়ারে সরকার শিবিরে। মালদহের মানিকচক, রতুয়া, হরিশচন্দ্রপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় সে শিবির চালু হয়েছিল। তবে সব শিবিরেই ভিড়ে ভিড়াক্কার বা ফর্ম লুটপাট করে নেওয়ার অভিযোগের পাশাপাশি তা নিয়ে শুরু হয় হাতাহাতি, মারপিট।
মানিকচক ব্লকের উত্তরচণ্ডীপুর হাইস্কুল, হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের সুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের হাসিনা হাইস্কুলে সকাল থেকেই লম্বা লাইন পড়েছিল। বেলা গড়াতেই চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা। উত্তরচন্ডীপুরে ভিড়ের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়ে দু’জন শিশু। এর পর শিবির বন্ধ করে দেওয়া হয়।
হরিশ্চন্দ্রপুরেও দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ফর্ম না পেয়ে লুঠপাট শুরু হয়। চলে মারপিট। তাতে মহিলা-সহ ৮ জন আহত হন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। দু’টি ক্ষেত্রেই পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
হুগলির ডানকুনির পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের শিবিরে হুড়োহুড়িতে পড়ে গিয়ে আহত হন তিন জন। আহতদের স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান ডানকুনি পুরপ্রশাসক হাসিনা শবনম।
পূর্ব বর্ধমানের ভাতার ব্লকের বলগোনা গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার শিবিরে শ’য়ে শ’য়ে মানুষ ভিড় করেন। অধিকাংশই ছিলেন মহিলা। সকালে শিবির শুরু হতেই হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। ঠেলাঠেলির চাপে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। আহত হন দু’জন। তাঁদের শুশ্রূষার ব্যবস্থা করা হয়। বলগোনা পঞ্চায়েতের প্রধান আমজাদ শেখ বলেন, ‘‘সকলেই যাতে সুশৃঙ্খল ভাবে পরিষেবা পেতে পারেন, সে জন্য পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি থেকে পুলিশকর্মীরা তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেন।’’ সিভিক ভলান্টিয়ার্সও ভিড় সামাল দিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তবে ভাটাকুলের বাসিন্দা ফতেমা বিবির মতে, ‘‘প্রতিটি গ্রামের স্কুলে শিবির করলে এত হয়রানি হবে না।’’ ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী বলেন, ‘‘প্রথম দিন বলেই হয়তো সমস্যা হচ্ছে। তবে লোকজন যাতে সমস্যায় না পড়েন, সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ বঞ্চিত হবেন না।’’