মমতাকে এড়িয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত! সতর্ক করে নির্দেশিকা অর্থসচিবের

হঠাৎ কেন এমন মেমো জারি করলেন অর্থসচিব? 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৫৭
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।ফাইল চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন ছাড়াই কোনও কোনও দফতর গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলছে বলে বৃহস্পতিবার ‘মেমোরান্ডাম’ জারি করে সতর্ক করলেন অর্থসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে ঘটলে তার দায় সংশ্লিষ্ট দফতর এবং ‘ব্যক্তিগত ভাবে’ অফিসারদের উপরে বর্তাবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

ঘটনাচক্রে এ দিনই পর্যটনসচিব অত্রি ভট্টাচার্য এবং পর্যটন উন্নয়ন নিগমের এমডি তন্ময় চক্রবর্তীকে বদলি করেছে নবান্ন। অত্রিবাবুকে পাঠানো হয়েছে কম গুরুত্বের ক্রেতা সুরক্ষা দফতরে। তন্ময়বাবু হচ্ছেন ডিরেক্টর (ইএসআই)।

হঠাৎ কেন এমন মেমো জারি করলেন অর্থসচিব?

Advertisement

নবান্নের খবর, মুখ্যমন্ত্রী এ দিন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহকে একটি ‘নোট’ পাঠিয়ে জানান, তাঁর অগোচরে কিছু দফতর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলছে। সেই নোট দেখেই মুখ্যসচিব অর্থ দফতরকে মেমো জারি করার নির্দেশ দেন। বলে দেওয়া হয়, যদি মুখ্যমন্ত্রীকে উপেক্ষা করে কোনও দফতর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, তা হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কোন দফতর এমন কাজ করেছে, তার উল্লেখ মুখ্যমন্ত্রীর নোটে ছিল না। প্রশাসনের শীর্ষকর্তারাও মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রীতি লঙ্ঘন হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। উদাহরণ হিসেবে বলা হচ্ছে, সম্প্রতি এক আধিকারিক কোনও রকম আলোচনা না করেই জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে চলার কথা বলে সার্কুলার জারি করেন। তাতে ক্ষুব্ধ হন নবান্নের শীর্ষ মহল।

অর্থসচিব সমস্ত দফতরকে সতর্ক করে বলেছেন, এখন থেকে নীতিগত সিদ্ধান্ত মুখ্যসচিবের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠাতে হবে। অনুমোদিত হলে তা পেশ করতে হবে মন্ত্রিসভার বৈঠকে। এই প্রথার অন্যথা হলে যে কোনও নীতিগত সিদ্ধান্ত ‘অসার’ হয়ে যাবে। এ নিয়ে কিছু জিজ্ঞাস্য থাকলে দফতরের কর্তাদের সরাসরি মুখ্যসচিবের কাছে যেতে বলা হয়েছে।

কেন সরকার এমন কড়া অবস্থান নিচ্ছে, তা ব্যাখ্যা করে অর্থসচিব মেমো-তে লিখেছেন, প্রশাসন পরিচালনার নিয়ম অনুযায়ী সমস্ত নীতিগত সিদ্ধান্ত রাজ্য মন্ত্রিসভা গ্রহণ করে। মন্ত্রিসভায় প্রস্তাবিত না হলে নিদেন পক্ষে মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত পেশ করতেই হয়। কারণ, কোনও দফতরের নতুন নীতি গ্রহণের ফলে ভবিষ্যতে আর্থিক দায় চাপতে পারে অথবা আইনি বা প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হতে পারে।

সেই কারণে প্রশাসনিক ও আইনগত দিক খতিয়ে দেখে যদি সেই নীতির আর্থিক দায় চিরকালীন ভাবে সরকার নিতে সক্ষম হয়, তবেই নীতি গ্রহণ করা হয় বলেই জানাচ্ছেন নবান্নের শীর্ষকর্তারা। তাঁদের একাংশ জানাচ্ছেন, বাম জমানায় মন্ত্রীরা বহু সিদ্ধান্ত নিজেরা নিতে পারতেন। কিন্তু এখন সব নীতিগত সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভায় পেশ করা হয়। ফলে একা কারও উপর দায় বর্তায় না। সেই প্রথা বজায় রাখতে চান মুখ্যমন্ত্রী। তবে নবান্নের এক শীর্ষকর্তার বক্তব্য, ‘‘এ সব রুটিন বিষয়। দফতরগুলিকে নতুন করে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে মাত্র।’’

এ দিকে রাজ্যের নতুন পর্যটনসচিব হচ্ছেন নন্দিনী চক্রবর্তী। তাঁর ছেড়ে আসা খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ এবং উদ্যানপালন দফতরে যাচ্ছেন পারভেজ সিদ্দিকী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement