বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও মুকুল রায়। ফাইল চিত্র।
বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল-সহ অন্য দল থেকে নানা স্তরের নেতা, কর্মী এবং জনপ্রতিনিধিকে নিজেদের দলে নিয়েছে বিজেপি। সেই সময় প্রশ্নের জবাবে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বহু বার বলেছেন, দল বড় করতে এবং ভোটে জিততে এটাই তাঁদের অন্য রাজ্যে পরীক্ষিত এবং সফল রণকৌশল। কিন্তু ভোটে হারার পরে সেই দলত্যাগ নিয়েই অবস্থান ১৮০ ডিগ্রি বদলে ফেললেন দিলীপবাবু! মুকুল রায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে যাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ফেসবুকে রবিবার দিলীপবাবু লিখেছেন, ‘‘দল ছাড়াটা এখন অনেকের অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছে। বিজেপি সেই লোকদের উপর নির্ভর করে, যারা রক্ত দিয়ে, ঘাম ঝরিয়ে দলকে দাঁড় করিয়েছে। যাঁরা শুধু ক্ষমতা ভোগ করতে চান, তাঁরা বিজেপিতে থাকতে পারবেন না। আমরাই রাখব না।’’
এ দিকে, মুকুল তৃণমূলে ফিরে যাওয়ার পর বিজেপি-র ভিতর থেকে আরও নানা ‘বেসুর’ শোনা যাচ্ছে। যেমন-- উত্তর ২৪ পরগনার বিজেপি নেতা এবং মুকুল-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রতন ঘোষ এ দিন সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূলে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা কার্যকরী সভাপতি এবং জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ থাকাকালীন গত লোকসভা ভোটের আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।
বাগদার প্রাক্তন বিধায়ক তথা বিজেপির তফসিলি মোর্চার রাজ্য সভাপতি দুলাল বরের কথাতেও এ দিন ‘বিদ্রোহে’র ইঙ্গিত মিলেছে। তিনি বলেন, ‘‘তফসিলি মোর্চার রাজ্য সভাপতি হলেও দল আমাকে ভোটে প্রার্থী করেনি। আমিও তো বানের জলে ভেসে বিজেপিতে যাইনি!’’
দিলীপবাবু ঘোষণা করেছেন, মুকুল বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে যাওয়ায় দলের কোনও ক্ষতি হয়নি। শনিবার এর বিপরীত মত জানিয়েছিলেন বিজেপি নেতা তথা সাংসদ অর্জুন সিংহের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় সুনীল সিংহ। রবিবার বিজেপির ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যও বলেছেন, ‘‘মুকুল রায় বিজেপি ছাড়ায় দলের শক্তি কমবে। উনি সংগঠনের লোক। ওঁকে সংগঠনেই কাজ করতে দিলে ভাল হত।’’
বিজেপি বিধানসভা ভোটে হারার পর থেকে দলের বর্ষীয়ান নেতা তথা ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শিবপ্রকাশ, অরবিন্দ মেনন এবং দিলীপবাবুর বিরুদ্ধে টুইটারে একাধিক বার সরব হয়েছেন। তবে তিনি ওই চার নেতার নামের আদ্যক্ষর লিখেছিলেন। তথাগতবাবু এ দিন কৈলাস-মুকুলের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে কটাক্ষ করা একটি টুইট ছড়িয়ে দেন। যেখানে কৈলাস-মুকুলের একটি ছবি পোস্ট করে বলা হচ্ছে, কৈলাসকেও যেন তৃণমূলে নিয়ে নেওয়া হয়। না হলে বন্ধু মুকুলকে না পেয়ে তিনি হতাশ হয়ে পড়তে পারেন।