কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে জলের তলায় শিলিগুড়ির বহু এলাকা। —নিজস্ব চিত্র।
বৃষ্টি এলেই জলের তলায় চলে যায় শিলিগুড়ির বহু এলাকা। অভিযোগ, বছরের পর বছর একই ভোগান্তি হয় বাসিন্দাদের। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বৃহস্পতিবারের রাতের বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়েছে শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বহু এলাকা। জলযন্ত্রণার শিকার বাসিন্দারা ক্ষোভে বলছেন, নেতাদের গালভরা প্রতিশ্রুতিই সার। দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে বেহাল দশা নিকাশি ব্যবস্থার। তাই শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের আসন্ন নির্বাচনে অনেকেই ভোটদান করতে চান না।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বিধাননগরের নেতাজি পল্লি, রবীন্দ্র পল্লি, পশ্চিম সহোদর গজ, পূর্ব মিলন পল্লি, আমবাড়ি, কাজিগঞ্জ-সহ বহু এলাকা জলমগ্ন। গত সপ্তাহের রবিবার রেকর্ড বৃষ্টির পর খানিকটা রেহাই মিললেও বৃহস্পতিবার রাত থেকে শিলিগুড়িতে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। রাত থেকে বেড়েছে বৃষ্টি। কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে জল জমে যায় গোটা এলাকায়। অনেকের বাড়িতে ঘরে জল ঢুকতে থাকে। তাঁদের রাত কেটেছে আতঙ্কে। দিন কাটছে শুকনো খাবার খেয়ে। এলাকার এক ভুক্তভোগী উষা সিংহ বলেন, ‘‘রাত থেকে কষ্টের মধ্যে রয়েছি। প্রতি বার বর্ষায় একই পরিস্থিতি হয়। বিভিন্ন এলাকার নোংরা, আবর্জনার জল এসে ঢুকছে ঘরে। সাপ-ব্যাঙ ঘরে ঢুকে যাচ্ছে। গোটা এলাকার রাস্তার কল জলে ডুবে রয়েছে। ড্রেনের কোনও ব্যবস্থা নেই। নেতারা শুধুই প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু কোনও কাজ হয় না। ঘরে রান্নাবান্না বন্ধ। শুকনো খাবার খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। এ বার আমরা ভোট দেব না।’’
আগামী ২৬ জুন শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ নির্বাচন। তার আগে বর্ষার শুরুতেই নিকাশি-সমস্যায় অস্বস্তিতে স্থানীয় প্রশাসন। আর এক বাসিন্দা নমিতা পালের দাবি, ‘‘বিয়ের পর থেকে ২৬ বছর ধরে এখানে রয়েছি। পরিস্থিতিতে বদল ঘটেনি। প্রশাসন খানিকটা কাজ করেছিল। কিন্তু অনেকেই নিকাশির জন্য নিজেদের জমি ছাড়তে নারাজ। কাজেই ড্রেনের কাজও আটকে রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিকাশির কাজ করতে এলে বচসা বেধে যায়।’’ যদিও তিনি বলেন, ‘‘সমস্যা সত্ত্বেও ভোট দেব। কিন্তু এই অব্যবস্থার সমাধানের জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করব।’’
স্থানীয়দের সমস্যা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ভোটপ্রার্থীরা। সমস্যা সমাধানের আশ্বাসও দিয়েছেন তাঁরা। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের বিদায়ী বিরোধী দলনেতা তথা খড়িবাড়ি ৫ নম্বর নির্বাচন কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কাজল ঘোষ জানান, ‘‘নিকাশির সমস্যা রয়েছে। তবে সে কাজ এসজেডিএ থেকে করানোর উদ্যোগী হয়েছিল প্রশাসন। কিছুটা কাজও হয়েছিল। তবে অনেকেই নিজেদের জমি ছাড়তে নারাজ। ফলে নিকাশির কাজ শেষ হয়নি। এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করা হবে।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।