—ফাইল চিত্র।
করোনা, আমপানের রেশ কাটেনি, এর মধ্যেই টানা বৃষ্টিতে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যার ভ্রূকুটি দেখছে রাজ্য সরকার। শনিবার বিভিন্ন জেলা থেকে অবিরাম বৃষ্টির যে রিপোর্ট সেচ ও কৃষি দফতর পাঠিয়েছে, তাতে আগামী তিন দিনে পরিস্থিতি আরও চিন্তাজনক হতে পারে বলে নবান্নের আশঙ্কা। আবহাওয়া দফতর ইতিমধ্যেই সোমবার থেকে টানা তিন দিন দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির আভাস দিয়েছে। এমনিতেই বেশ কয়েকটি নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে, চার-পাঁচটি জেলায় বিস্তীর্ণ কৃষিজমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। এর পর যদি আবার বৃষ্টি এবং ঝাড়খণ্ডের বাঁধগুলি থেকে জল ছাড়া শুরু হয়, তা হলে দক্ষিণবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
নবান্নের খবর, গত কয়েকদিনের বৃষ্টির ফলে পশ্চিম মেদিনীপুরের বাকরাবাদের কাছ কেলেঘাই, নারায়ণবাড়ের কাছে কপালেশ্বরী, পূর্বমেদিনীপুরের আমগাছিয়ার কাছে কেলেঘাই, পশ্চিম মেদিনীপুরের রানিচকের কাছে রূপনারায়ণ, পূর্ব মেদিনীপুরের খন্যাডিহির কাছে দুর্বাচটি, মালদহের মানিকচক ঘাটের কাছে গঙ্গা, উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা ও গোবরডাঙার কাছে যমুনা বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। শনিবার দুপুর পর্যন্ত বীরভূমের কুলতোড় ব্যারাজে ৬৫মিলিমিটার, বাঁকুড়ায় ৭৮ মিমি, মুকুটমনিপুরে ৬৫ মিমি,দক্ষিণ ২৪ পরগনার উত্তরভাগে ৬৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর ফলে দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনার বিরাট এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ধানের জমি জলের নীচে চলে গিয়েছে। জোয়ারের জল ঢোকায় সুন্দরবনের মিনাখাঁ থেকে মোহনপুর, বিদ্যাধরী থেকে সন্দেশখালি, বাসন্তী-চুনাখালি, গরান বোস, মৌসুনি, পাথরপ্রতিমা, নামখানা এবং সাগর দ্বীপে বহু নদী বাঁধ আবার ভেঙেছে। সে সব বাঁধ ভেঙে গ্রামে জল ঢুকতে শুরু করেছে বলেও নবান্নে খবর এসেছে। যদিও স্থায়ী সমুদ্র বা নদী বাঁধের ক্ষয়ক্ষতি খবর শনিবার বিকাল পর্যন্ত আসেনি বলে সেচ দফতর জানিয়েছে।
সরকারের চিন্তা বাড়িয়েছে, আলিপুর আবহাওয়া দফতরের নতুন সতর্কবার্তা। শনি-রবিবার উত্তরবঙ্গে বৃষ্টিপাতের তেমন কোনও খবর নেই। তবে এ দিন দুই ২৪ পরগনা, নদিয়াতে বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়া দফতর নতুনভাবে তৈরি একটি নিম্নচাপের জন্য ২৪, ২৫, ২৬ অগস্ট দক্ষিণবঙ্গে টানা বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। যা নবান্নের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনিতেই পুকুর, খাল বিল জলে ভর্তি হয়ে রয়েছে। বেশ কয়েকটি স্থানে নদীর জলও বাড়ছে। কারণ ঝাড়খণ্ডের জল নীচে বইতে শুরু করলে এ রাজ্যের নদীগুলিতে জল আগামী দু’তিন আরও বাড়বে। তার উপর আবার একটি নিম্নচাপ ধাক্কা দিলে রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি আসন্ন বলে উদ্বেগে রয়েছেন নবান্নের কর্তারা।