—প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী বাছাই নিয়ে দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তৃণমূলের বেশ কয়েক জন বিধায়ক। তাঁদের অনেক অনুগামীরা নির্দল হয়ে শাসক দলের বিরুদ্ধেই প্রার্থীও হয়েছিলেন। তবে তাঁদের মধ্যে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের বিধায়ক আবদুল করিম চৌধুরীর অনুগামীরা ছাড়া অন্যেরা তেমন দাগ কাটতে পারেননি। মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের অনুগামীরা শুধু ভরতপুর ১ ব্লকে কয়েকটি আসনে জিততে পেরেছেন।
হুমায়ুন ছাড়াও মুর্শিদাবাদে প্রার্থী বাছাই নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রেজিনগরের বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরী, নওদার বিধায়ক সাহিনা মমতাজ খান এবং জলঙ্গির বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক। পরে আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক উভয়পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের দাবি ছিল, সেই বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তা মানেনি জেলা সভাপতি। এর পরেই হুমায়ুন ভরতপুর ১ ও ২ ব্লক ছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকার দলের নির্দল প্রার্থীদের সমর্থনের কথা ঘোষণা করেন। হুমায়ুনকে নির্দলদের হয়ে প্রচার করতেও দেখা যায়। তবে তাঁর অনুগামীরা তেমন ছাপ ফেলতে পারেননি। হুমায়ুনের দাবি, ‘‘সন্ত্রাস করে নির্দলদের ফল খারাপ করানো হয়েছে।’’ তৃণমূলের সার্বিক ফল প্রসঙ্গে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘‘প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া এবং দলের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে এ বার ফল কিছুটা খারাপ হয়েছে।’’ রবিউল আলম চৌধুরী বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল এখনও পরিষ্কার নয়, হলে বলব।’’ সাহিনা মমতাজ খান মন্তব্য করতে চাননি।
ইসলামপুরে সকাল থেকেই এলাকার উপরে নজর রেখেছিলেন করিম। তবে কিছু এলাকার সন্ত্রাস হয়েছে বলে দাবি করিম অনুগামীদের। তার মধ্যে ইসলামপুরের আগডিমঠি খুন্তি এলাকায় ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগ করেছেন তাঁরা। ওই এলাকা ছাড়া বেশির ভাগ এলাকাতেই কোনও পঞ্চায়েতে ৯টি, কোথাও আবার পাঁচটি আসন পেয়েছেন নির্দল প্রার্থীরা। এ দিন সেই জয়ের পরে করিম বলেন, ‘‘রক্ত নিয়ে রাজনীতি আমি ঘৃণা করি। ওরা হারতে চায় না। পুলিশের মদত নিয়ে এলাকা দখলের চেষ্টা করছিল। আমি দিদিকে আগেই বলেছি পুলিশের হাত খুলে দিন। আমি ভোট বয়কটের ডাক দিতাম। ওরা সন্ত্রাস করে ভোট করে বলেই আমি নির্দল প্রার্থী দিয়েছি।’’
দুর্নীতি এবং ভাবমূর্তি প্রসঙ্গে দলের একাংশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন হুগলির বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। এ দিন তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূলের প্রতীক পাওয়া প্রার্থীদের উপরেই মানুষ ভরসা করেছেন। আমার দেওয়া প্রার্থীদের তালিকা অনুযায়ী যাঁরা দলীয় প্রতীক পেয়েছিলেন, তাঁদের বেশির ভাগই জিতেছেন। তৃণমূলের যাঁরা জেতেননি, দলের গদ্দাররাই তাঁদের হারিয়েছে।’’
তৃণমূল নেতানেত্রীরা অবশ্য এই নিয়ে বিশেষ কেউই মুখ খুলতে চাননি। যদিও দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘মানুষ আমাদের নেত্রীর উন্নয়নকে সমর্থন করেছেন। এখানে চিন্তার কোনও কারণ নেই।’’