ছবি পিটিআই।
টিটাগড়ের বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লের খুনের ঘটনার প্রেক্ষিতে সোমবার দিনভর আন্দোলনের পুরোভাগে থেকে কলকাতার রাজপথে দাপিয়ে বেড়ালেন রাজ্য দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। যিনি আদতে দিল্লির নেতা। বাংলার কোনও নেতা কি ওই আন্দোলন পরিচালনা করতে পারতেন না? বিজেপির অন্দরেই এই প্রশ্ন ঘুরছে। আর সেখানেই ফের আভাস মিলছে রাজ্য বিজেপিতে শিবির ভাগাভাগির।
দিলীপ ঘোষ এবং তাঁর শিবিরের নেতারা সোমবার সারা দিন বিভিন্ন জেলায় ব্যস্ত ছিলেন আমপান-দুর্নীতির বিরুদ্ধে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে। কিন্তু আচমকা একটা বড় ঘটনা ঘটলে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি বাতিল করে ঘটনাস্থলে চলে যাওয়াই রাজনৈতিক দলের কান্ডারীদের রেওয়াজ।
তা হলে দিলীপবাবু কেন সোমবার জেলার কর্মসূচি বাতিল করে কলকাতায় চলে এলেন না? বিশেষত যে আন্দোলনে দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও জড়িয়ে গিয়েছেন, সেখান থেকে তিনি সারা দিন দূরে থাকলেন কেন? দলের একাংশ ঘরোয়া আলোচনায় এখন এই প্রশ্ন তুলছে। তাদের আরও প্রশ্ন, দিলীপবাবুর ঘনিষ্ঠ কাউকেই বা ওই বৃত্তে দেখা গেল না কেন?
আরও পড়ুন: আততায়ী দাঁড়িয়ে ছিল মণীশের গা ঘেঁষেই, সামনে এল হত্যাকাণ্ডের ফুটেজ
সোমবার সকালে মণীশের বাড়িতে যান কৈলাস, রাজ্য দলের সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন, দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়, সাংসদ অর্জুন সিংহ, যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খান এবং রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় সিংহ। তাঁদের মধ্যে একমাত্র সঞ্জয় ছাড়া আর সকলের সঙ্গেই দিলীপবাবুর সখ্য কার্যত আনুষ্ঠানিক।
পরে বিজেপির যে বাহিনী নীলরতন সরকার হাসপাতাল থেকে রাজভবন পর্যন্ত মণীশ-হত্যার প্রতিবাদে সক্রিয় ছিল, সেখানেও ছিলেন সেই কৈলাসরাই। মুকুলবাবু অবশ্য দলীয় বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি চলে যাওয়ায় দুপুরের পর থেকে তাঁকে আর ওই আন্দোলনে দেখা যায়নি। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত কৈলাস, অর্জুন, সৌমিত্রদের সঙ্গে ছিলেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত, বিজেপির অন্দরের সমীকরণে যাঁরা মুকুল-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
আরও পড়ুন: মমতার ঘোষণার পরেও উত্তরের অপেক্ষায় ওঁরা
মণীশ-হত্যার প্রতিবাদে ওই আন্দোলনের পুরোভাগে তিনি থাকলেন না কেন? জবাবে দিলীপবাবুর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘আমি কাকদ্বীপে দলীয় কর্মসূচিতে আছি। আমাদের বড় নেতারা ওই আন্দোলন দেখছেন।’’