মানিক ভট্টাচার্য।
বিধানসভা থেকে আদালতের দিকে রওনা হয়েছিলেন বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। পথে সাংবাদিকরা ঘিরে ধরতেই আচমকা মেজাজ হারালেন। একদা আইন কলেজের অধ্যক্ষ এবং গবেষক মানিকের মুখ থেকে মুহূর্তের মধ্যে বেরিয়ে এল অদ্ভুত ‘বাংরেজি’ ভাষণ। সাংবাদিকদের প্রতি এক রকম বিরক্তি দেখিয়েই তিনি বলে উঠলেন, ‘‘আই অ্যাম রক্তাক্ত বাই প্রেস!’’
তবে মঙ্গলবার মানিক একবার নয়, বার বার মেজাজ হারিয়েছেন, প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁকে সশরীরে আদালতে উপস্থিত থাকতে বলেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এজলাস থেকে বেরিয়ে এক আইনজীবীকে তিনি বলেন, ‘‘আমাকে জেলে পাঠিয়ে দাও। আমি জেলে যেতে চাই। জেলের ডাল-রুটি খাব।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই আইনজীবী আনন্দবাজার অনলাইনের সাংবাদিককে জানিয়েছেন, আদালত থেকে বেরিয়ে উত্তেজিত দেখাচ্ছিল মানিককে।
মঙ্গলবার দুপুর ২টোর সময় আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল বিধায়কের। বিধায়ক সময়েই সেখানে পৌঁছে যান। তবে তার আগে সকালে বিধানসভার অধিবেশনেও যোগ দেন মানিক। বেরোনোর পথে ব্রাত্য বসু, ইন্দ্রনীল সেনের সঙ্গে মানিককে কথা বলতেও দেখা যায় বলে খবর। এর পর আদালতের দিকে রওনা হওয়ার পথে সাংবাদিকরা ঘিরে ধরলে প্রকাশ্যেই ধৈর্য হারান বিধায়ক। কিছুটা উত্তেজিত হয়েই তাঁকে উঁচু স্বরে সাংবাদিকদের নিয়ে অভিযোগ করতে শোনা যায়। এমনকি সাংবাদিকরা তাঁকে আদালতে যেতে বাধা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মানিক। সেই সময়েই উত্তেজিত বিধায়ক ক্ষিপ্ত স্বরে বলে ওঠেন ‘‘আই অ্যাম রক্তাক্ত বাই প্রেস!’’ উত্তেজনার বশে ভাষাবিভ্রাট হয় তাঁর।
মানিক বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা করেছেন। এক সময় যোগেশ চন্দ্র চৌধুরী আইনের কলেজের অধ্যক্ষও ছিলে। বর্তমানে রাজ্যের বিধায়ক। সোমবার পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদেও ছিলেন। তবে বর্তমানে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে পর্ষদের সভাপতি পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে মানিককে। সূত্রের খবর, তার পর মানিকের বাড়িতে যখন তখন সাংবাদিকের এসে পড়াতেই বিরক্ত হয়েছেন বিধায়ক। প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগে মানিককে সিবিআই ডেকে পাঠালে সেখানেও তাঁকে ঘিরে ধরে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা। সেই সময়েও বিরক্ত হতে দেখা গিয়েছিল মানিককে। এজলাস থেকে বেরোনোর পর মানিক বলেন, ‘‘সত্য সব সময় সুন্দর হয়।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।