ম্যানগ্রোভ অরণ্য।—ফাইল চিত্র।
ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় ম্যানগ্রোভের প্রাচীর কত কার্যকর, সম্প্রতি বুলবুলের হামলাতেও সেটা দেখা গিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ কাটাতে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের বৈঠকে সেই ম্যানগ্রোভেরই দাওয়াই দেওয়া হল। বৃহস্পতিবার নিউ টাউনে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং রাজ্য পরিবেশ দফতর আয়োজিত রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থা ‘ইন্টার-গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ বা আইপিসিসি-র রিপোর্টের আলোচনায় বলা হয়েছে, ম্যানগ্রোভ অরণ্যের প্রাচীর তৈরি করেই ঝড়ের ঝাপ্টা বহুলাংশে সামাল দেওয়া সম্ভব।
আইপিসিসি-র রিপোর্টের অন্যতম লেখক এবং ব্যাঙ্ককে এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির শক্তি ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর’ জয়শ্রী রায় জানান, ম্যানগ্রোভের মাধ্যমে বিপর্যয় সামলানোর উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা যায়। তাই ম্যানগ্রোভ অরণ্য বাড়ানো প্রয়োজন। বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রের তলায় প্রবাল, মাছেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানান তিনি।
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র জানান, সুন্দরবনের যে-সব এলাকায় (বকখালি, পাথরপ্রতিমা, সাগরদ্বীপ) ম্যানগ্রোভের ঢাল নেই, বুলবুলের দাপটে সেই সমস্ত জায়গায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে ভাটার সময় ঝড় আসায় কম হয়েছে জলোচ্ছ্বাস। কল্যাণবাবুর বক্তব্য, জলবায়ু বদলের ধাক্কায় গাঙ্গেয় বদ্বীপে (পশ্চিমবঙ্গ যার অন্তর্গত) বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। বর্ষার চরিত্র বদল-সহ জলবায়ু পরিবর্তনের নানান ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই দেখা যাচ্ছে এখানে।
পরিবেশ বাঁচাতে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির ব্যবহার বাড়ছে এ দেশে। জয়শ্রীদেবী বলেন, বিদ্যুৎচালিত গাড়ি বাড়লে গাড়ির ধোঁয়া কমবে ঠিকই, কিন্তু বিদ্যুতের চাহিদা বাড়তেই থাকবে। তাই কয়লা পোড়ানো হবে বেশি করে। ‘‘কোল ইন্ডিয়ার লাভের টাকা গঙ্গা সাফাইয়ে না-ঢেলে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদনে লাগানো উচিত,’’ বলেন জয়শ্রীদেবী।