কয়েন গুনতেই সময় লেগেছে তিন দিন। ছবি: সংগৃহীত।
দু’টাকার কয়েন জমিয়ে প্রায় দু’লক্ষ টাকার বাইক কিনলেন নদিয়ার এক যুবক।
নাম সুব্রত সরকার, পেশায় বিড়ির ব্যবসায়ী। বিড়ি বেঁধে তা নদিয়ারই স্থানীয় দোকানে সরবরাহ করেন সুব্রত। বয়স ৪৬।
সুব্রত দু’টাকার কয়েন জমাতে শুরু করেন ২০১৬ সালে, নোটবন্দির সময় থেকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিল করায় সে সময় বড় অঙ্কের নোটের অভাব তৈরি হয়েছিল সর্বত্র। সুব্রতকে সে সময় তাঁর ক্রেতারা প্যাকেট প্যাকেট দু’টাকার কয়েনে ‘পেমেন্ট’ দিতেন। তখন থেকেই কয়েন জমানোর শুরু। যা গত ছ’বছরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পরও বন্ধ হয়নি।
ছ’বছরে ফুলেফেঁপে উঠেছে সুব্রতর সঞ্চয়ও। দিন কয়েক আগে ওই সঞ্চয়ের অর্থ দিয়েই এক লক্ষ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের একটি মোটরবাইক কিনেছেন তিনি। তবে সুব্রতর দেওয়া বাইকের দামের হিসাব করতে ঝাড়া তিন দিন সময় লেগেছে দোকানের কর্মীদের।
বাইক কিনবেন বলে অবশ্য দু’টাকার কয়েন জমাননি সুব্রত। সেই ইচ্ছে তার হয়েছিল গত সপ্তাহে নদিয়ার একটি বাইকের শোরুমের পাশ দিয়ে যেতে যেতে। তখনই তাঁর দীর্ঘলালিত সঞ্চয়ের কথা মনে পড়ে সুব্রতর। নদিয়ার ৪৬ বছরের ব্যবসায়ী ভাবেন, ওই অর্থ দিয়েও তো তিনি মোটরবাইক কিনতে পারেন।
শুরু হয় প্রস্তুতি। প্রথমে পরিবারকে এ বিষয়ে জানান সুব্রত। তার পর ওই শোরুমকে ফোন করে সুব্রত জানতে চান, তাঁরা আদৌ কয়েনে বাইকের দাম নেবে কি না। দোকান সম্মতি দিলে ১৭ বছরের ছেলেকে নিয়ে শুরু হয় সুব্রতর কয়েন গোনার কাজ। ১০ হাজার টাকা করে কয়েন পাঁচটি ব্যাগে ভাগ করেন তাঁরা। বাকি কয়েন ভাগ করা হয় আরও দু’টি বস্তায়। দু’টাকার কয়েনের সাতটি ব্যাগ দোকানে পৌঁছতে একটি রিকশা ভাড়া করতে হয় সুব্রতকে।
সেই টাকা তিন দিন ধরে গোনেন দোকানের কর্মচারীরা। তার পর হাতবদল হয় বাইকের। দোকানের ম্যানেজার প্রবীর বিশ্বাস জানিয়েছেন, এক লক্ষ ৮০ হাজার টাকা দামের বাইকের দেড় লক্ষ টাকাই কয়েনে দিয়েছেন সুব্রত। টাকা গোনার পর মঙ্গলবারই গাড়ির চাবি তুলে দেওয়া হয় সুব্রতর হাতে।