তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই।
পরীক্ষা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে মতপার্থক্যকে সরাসরি রাজনীতির লড়াইয়ে নিয়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টিকে যে আগামী নির্বাচনে অস্ত্র করতে চলেছেন, শুক্রবার তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। এ দিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চ থেকে পরীক্ষা নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের উপর চাপ তৈরির অভিযোগ করে মমতার প্রশ্ন, ‘‘ভোটের সময় মানুষকে জবাব দিতে পারবেন তো? ভোটের সময় কিন্তু কোর্ট দেখালে চলবে না।’’
স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষা ঘিরে জটিলতার জন্য কেন্দ্র এবং ইউজিসি-কে দায়ী করেছেন মমতা। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘আদালতকে আমরা সম্মান করি। আদালত নিয়ে একটি কথাও বলব না। তবে কেন্দ্রীয় সরকার আর ইউজিসি যারা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় চালায় তারা কেন ছাত্রছাত্রীদের বিপদে ফেলছে?’’ মমতা জানান, ইউজিসি এপ্রিল মাসে যে পরামর্শ দিয়েছিল, বাংলা-সহ অন্য রাজ্য তার ভিত্তিতেই এগিয়েছিল। জুলাই মাসে তারা নতুন নির্দেশিকা পাঠানোয় জটিলতা তৈরি হয়েছে। বিজেপির বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ, ‘‘করোনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহামারি তৈরি করা হচ্ছে। কালা আইনের ভয় দেখানো হচ্ছে।’’
স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে পরীক্ষা নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যেই সামনে এসেছে নিট এবং জেইই নিয়ে উৎকণ্ঠা। করোনার আবহে এই পরীক্ষা নিতে যে সমস্যা এ দিন তার উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই অবস্থায় ছাত্রছাত্রীদের উপর চাপ তৈরি করা হচ্ছে। বিহারের পরীক্ষার্থী কী ভাবে উত্তরপ্রদেশে গিয়ে পরীক্ষা দেবে? বীরভূমের পরীক্ষার্থী মুর্শিদাবাদে পৌঁছতে না-পারলে কে দায়িত্ব নেবে?’’
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে পরীক্ষা হবে না রাজ্যে ।। পরীক্ষা না নিয়ে পাশ নয়: কোর্ট
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘কাল কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রী অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করেছেন। তাঁরা পরীক্ষা দিয়ে এগিয়ে যাবেন, আর পশ্চিমবঙ্গের ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা না-দিয়ে বঞ্চিত হয়ে বছর নষ্ট করবেন? যে সব ছাত্রছাত্রী দূর থেকে পরীক্ষা দিতে আসবেন, তাঁদের অভিভাবক-সহ থাকার ব্যবস্থা করার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। সেটা পারবেন না ধরে নিয়েই মুখ্যমন্ত্রী বিরোধিতা করছেন।’’
আরও পড়ুন: নিট-মামলা ৬ রাজ্যের, বার্তা সনিয়ার
পড়ুয়াদের সমস্যাকে সামনে রেখে তৃণমূলের বিজেপি-বিরোধিতাকে ২০২১-এর ভোটের লড়াইয়ে জুড়ে দিতে চেয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘সারা দেশে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। ২০২১ সালে বাংলাই দেশকে স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেবে।’’ দিলীপ পাল্টা বলেন, ‘‘বিধানসভা ভোটে মানুষ ওঁর এই সব বিভ্রান্তিমূলক কথার যোগ্য জবাব দেবে।’’