প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ারও আর্জি জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কোভিডের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তাঁর সরকার কেন্দ্র এবং অন্য সংস্থাগুলিকে সবরকম সহযোগিতা করবে বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জানিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার করোনা টিকা নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠকে মমতা মোদীকে জানান, ‘‘টিকা পেলেই দ্রুত যাতে তার বন্টন হয়, তার জন্য আমরা কেন্দ্র এবং অন্য সব সংস্থার সঙ্গে একযোগে কাজ করতে প্রস্তুত।’’ পাশাপাশিই তিনি জানিয়েছেন, টিকা রাখার জন্য কোল্ড চেইন-সহ যে পরিকাঠামো প্রয়োজন, তা রাজ্যের রয়েছে। তবে ওই বৈঠকে রাজ্যের ‘বকেয়া অর্থ’ দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ারও আর্জি জানিয়েছেন মমতা।
পূর্ব পরিকল্পনা মতো মঙ্গলবার বাঁকুড়া থেকেই প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। বৈঠকে মোদী ছাড়াও ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-সহ অন্য মন্ত্রীরা। মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্যে মমতা ছাড়াও বৈঠকে ছিলেন মহারাষ্ট্রের উদ্ধব ঠাকরে, রাজস্থানের অশোক গহলৌত, গুজরাতের বিজয় রূপানি, দিল্লির অরবিন্দ কেজরীবাল, হরিয়ানার মনোহরলাল খট্টর, কেরলের পি বিজয়ন এবং ছত্তীসগঢ়ের ভূপেশ বাঘেল।
বৈঠকে মমতা স্মরণ করিয়ে দেন, দুর্গাপুজো, কালীপুজো, ছটপুজো এবং তার সঙ্গে শহরতলিতে ট্রেন চালানোর পর যে ভাবে করোনার প্রকোপ বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল, তা রুখে দিতে সক্ষম হয়েছে রাজ্য। সেই সঙ্গেই তিনি মোদীকে জানান, বাংলায় কোভিড সংক্রামিত রোগীর সংখ্যার হার এবং মৃত্যু হারও কমেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে একাধিক রাজ্যের সীমানা রয়েছে। তার সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্তও রয়েছে। ফলে পড়শি রাজ্য এবং পার্শ্ববর্তী দেশ থেকেও এই রাজ্যে রোগীরা আসেন। তা সত্ত্বেও অন্য রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গ এই যুদ্ধে দুর্দান্ত লড়াই করেছে।’’ করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আশাকর্মী, চিকিৎসক, নার্স-সহ সব কোভিড যোদ্ধার অবদানের কথাও বলেন তিনি। উল্লেখ করেন, আশাকর্মীরা এরই মধ্যে রাজ্য জুড়ে ৪৫ কোটি বাড়িতে গিয়ে কোভিড রুখতে করণীয় প্রচার করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া
আরও পড়ুন: অবশেষে হার মানলেন ট্রাম্প, তবে ভোটচুরির অভিযোগে এখনও অনড়
আরও পড়ুন: ইডি-র নথি জাল করে ‘তোলাবাজি’, গ্রেফতার সুদীপ্ত, নজরে আরও অনেকে
রাজ্যের বকেয়া অর্থের দাবিতেও মোদী-শাহের সঙ্গে বৈঠকে সরব হন মমতা। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্র অবিলম্বে রাজ্যের বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিক। তিনি উল্লেখ করেন, শুধু জিএসটি বাবদ রাজ্যের বকেয়ার পরিমাণ জমে হয়েছে ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। অন্য দিকে, সব দিকেই রাজ্যের খরচ বাড়ছে। শুধু কোভিডের মোকাবিলা খাতে রাজ্যের খরচের পরিমাণ বর্তমানে ৪ হাজার কোটি ছাড়িয়েছে। এই খাতে কেন্দ্র থেকে মাত্র ১৯৩ কোটি টাকা এখনও পর্যন্ত পেয়েছে রাজ্য। ফলে তাঁর দাবি, কেন্দ্র অবিলম্বে বকেয়া অর্থ রাজ্যকে মিটিয়ে দিক। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের কথায় সুর মিলিয়ে বৃহত্তর জনস্বার্থের কথা ভেবে রাজনৈতিক সমাবেশ, মিছিল এখনও কিছু দিন এড়িয়ে চলার পক্ষেই সম্মতি দেন মমতা।