এক মঞ্চে: কেব্ল টিভি সংস্থাগুলির এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সুমন বল্লভ
এক হাতে গুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিলেন। অন্য হাত বাড়ালেন পাল্টা সাহায্য চেয়ে। শুক্রবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ‘কেব্ল টিভি সামিট’-এ এটাই ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা।
এই পরিষেবায় যুক্ত সম্প্রচার (ব্রডকাস্টার) সংস্থা, মাল্টি-সার্ভিস-অপারেটর (এমএসও), কেব্ল অপারেটর, যন্ত্রাংশ নির্মাতা, সব পক্ষের ওই সম্মেলনের শিরোনাম ছিল— ‘কেব্ল টিভি জমায়েত।দিদি বলবেন।’
সম্প্রচার সংস্থা বা চ্যানেলগুলি এমএসও-দের পরিষেবা দেয়। কেব্ল অপারেটররা এমএসও-দের কাছ থেকে তা গ্রাহকদের ঘরে পৌঁছে দেন। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, বড় বড় সম্প্রচার সংস্থাগুলির হাতে জাতীয় চ্যানেলের রাশ থাকলেও স্থানীয় খবরের চ্যানেল বা অন্য কোনও অনুষ্ঠান সম্প্রচারের ক্ষেত্রে এমএসও ও কেব্ল অপারেটরের গুরুত্ব যথেষ্ট। ফলে স্থানীয় স্তরে কোন চ্যানেলে কী দেখানো হবে তার লাগাম অনেকটাই তাঁদের হাতে থাকে।
এ দিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কেব্ল অপারেটররাও এ বার স্বাস্থ্যসাথী ও শ্রম দফতরে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। ছোট ও মাঝারি শিল্প দফতরও তাঁদের সাহায্য করবে। অনেকটা প্রশাসনিক বৈঠকের ধাঁচে এ দিন কেব্ল অপারেটরদের কাছেই তাঁদের আর্থিক হাল জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের আয় কম শুনে সে জন্য গোড়ায় এমএসও-দের দুষে মঞ্চেই কয়েকজন এমএসও-কে ডেকে নেন তিনি। স্বল্প আলোচনার পরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, পরিষেবার খরচ বেশি বলেই সমস্যা হচ্ছে। এবং খরচ বেশির দায় বড় বড় সম্প্রচার সংস্থাগুলির। তাই ‘হাতজো়ড়’ করে মুখ্যমন্ত্রী তাদের কাছে খরচ কমানোর আর্জি জানান।
পাশাপাশি কেব্ল অপারেটর ও এমএসও-দের কাছে তাঁর আর্জি, তাঁরা যেন গোষ্ঠী সংঘর্ষের খবর না দেখান। সম্প্রীতি বজায় রাখতে প্রশাসন যে বার্তা দেয়, তা যেন তুলে ধরা হয়।
কেব্ল টিভির মাধ্যমে সিরিয়াল, সিনেমার জনপ্রয়িতা বাড়লেও সেখানেও বিষয়বস্তু নির্বাচনে রাশ টানার প্রয়োজনীয়তার কথা তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, অনেক সময়েই খারাপ জিনিস দেখানো হয়। এর ফলে সামাজিক অবক্ষয় বাড়ে। তাঁর কথায়, ‘‘খারাপটাই লোকে আজকাল তাড়াতাড়ি গ্রহণ করে।’’
‘অপপ্রচারে’র জন্য তাঁর রোষ থেকে বাদ যায়নি সোশ্যাল মিডিয়াও। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, সেখানকার ‘ফেক নিউজ’ লোকে যাচাই না করেই সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ায়।