নবান্নে রাজ ঠাকরেকে স্বাগত জানাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র
দেখা করলেন, বৈঠক করলেন, কিন্তু সক্রিয় সমর্থনের আশ্বাস দিলেন না। বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্র (ইভিএম) বাতিল করে ব্যালট ফেরানোর দাবিতে মহারাষ্ট্রে যে র্যালি করতে চলেছেন রাজ ঠাকরে, সেখানে যে তিনি শামিল হতে পারছেন না, রাজের পাশে দাঁড়িয়েই বুধবার সে কথা বলে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল চেয়ারপার্সনের সঙ্গে বৈঠক করার জন্য মঙ্গলবারই কলকাতায় এসেছিলেন মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএমএস)-র সুপ্রিমো রাজ ঠাকরে। তিনি বুধবার বিকেল ৩টে ৫০ নাগাদ রাজ নবান্নে পৌঁছন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তাঁর সঙ্গে ঘণ্টাখানেকের বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে রাজকে বিদায় জানাতে নীচে নামেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজ জানান যে, তাঁর দল মহারাষ্ট্রে একটি ‘নো-ইভিএম র্যালি’র ডাক দিয়েছে। ২১ অগস্টের সেই র্যালিতে যোগ দেওয়ার জন্য তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
ইভিএম বাতিল করে ব্যালটে ভোট নেওয়ার পক্ষে দেশের যে নেতানেত্রীরা সবচেয়ে সরব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের মধ্যে সামনের সারিতে। লোকসভা নির্বাচন প্রক্রিয়া চলাকালীন তো বটেই, ভোটের ফল প্রকাশিত হওয়ার পরেও ইভিএমে ভোটগ্রহণের স্বচ্ছতা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছিলেন। তার পরে একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ থেকেও তিনি ঘোষণা করেন যে, এ রাজ্যে পুরভোট আর ইভিএমে হবে না, ব্যালটে হবে। তাই রাজ ঠাকরের দল যে আন্দোলনে নামতে চলেছে, তাকে সমর্থন করার প্রশ্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও আপত্তি থাকার কথা ছিল না। রাজের বক্তব্যকে যে তিনি সমর্থন করছেন, সে ইঙ্গিতও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন ফের দিয়েছেন। কিন্তু ২১ অগস্ট মহারাষ্ট্রের ‘নো-ইভিএম র্যালি’তে তিনি যে যোগ দেবেন না, তা-ও এ দিন স্পষ্ট করেই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন।
আরও পডু়ন: উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী, শহরে নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নেবে কলকাতা পুলিশ
আরও পডু়ন: মামলা তুলে নিতে চাপ, উন্নাও কাণ্ডে সামনে এল আর এক বিজেপি নেতার নাম
রাজ ঠাকরে এ দিন জানান, দেশের সব বিরোধী দলকেই ২১ অগস্টের র্যালিতে তিনি আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই তিনি সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করেছেন এবং এই র্যালিতে হাজির থাকার অনুরোধ করেছেন বলে রাজ জানান। অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গেও যে কথা বলবেন, সে কথাও জানান রাজ। কিন্তু রাজের পাশে দাঁড়িয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন যে, ২১ অগস্টের র্যালিতে তিনি যোগ দিতে পারছেন না, ওই দিন তিনি অন্য কাজে ব্যস্ত থাকবেন।
লোকসভা নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে সব বিজেপি-বিরোধী দলকে একত্র করে কলকাতায় মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছিলেন, রাজ ঠাকরেও মহারাষ্ট্রে সেই ধরনের সমাবেশই করতে চান। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে যে, এই ‘নো-ইভিএম’ কর্মসূচির মাধ্যমে আরও এক বার মোদী-বিরোধী মঞ্চ তৈরি করার চেষ্টা চলছে কি না। রাজ জানান, তাঁদের কর্মসূচি ইভিএম-বিরোধী। কিন্তু ইভিএমের বিরোধিতা করার অর্থ যদি মোদীর বিরোধিতা করা হয়, তা হলে তাঁর মঞ্চকে মোদী-বিরোধী আখ্যা দিতেও তাঁর আপত্তি নেই।