তৃণমূলের নয়া কর্মসূচি ‘বাংলার গর্ব মমতা’র উদ্বোধনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দুই খুদে। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। ছবি: সুমন বল্লভ
আড়াই মাসে আড়াই কোটি মানুষের কাছে পৌঁছনোর কর্মসূচি নিল তৃণমূল। গোটা কর্মসূচিতে তৃণমূলের ৭৫ হাজার নেতাকর্মীকে যুক্ত করার এই পরিকল্পনা তৈরি করেছেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে)।
‘দিদিকে বলো’র পরে এই জনসংযোগ কর্মসূচির নাম ‘বাংলার গর্ব মমতা।’ শুরু হচ্ছে ৭ মার্চ। সোমবার তার আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। এই উপলক্ষ্যে নেতাজি ইন্ডোরে আয়োজিত দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আরও নম্র হতে হবে। বিনয়ী হতে হবে। মানুষের কাছে যেতে হবে। নিজেদের অহঙ্কার থাকলে তা ভেঙে গুঁড়িয়ে গরিব মানুষকে কাছে টেনে নিতে হবে।’’ দলের নেতাদের সতর্ক করে মমতা এদিন ফের বলেন, ‘‘দলের থেকে কোনও নেতাই বড় নয়।’’ সেই সঙ্গেই আসন্ন নির্বাচন নিয়ে দলের ভাবনা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ভাল কাজ করলে টিকিট নিশ্চিত।’’
আগামী মাসেই কলকাতা কর্পোরেশন সহ রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভায় ভোট হওয়ার সম্ভাবনা। যার অর্থ মমতার এই কর্মসূচি পুরনির্বাচনের সমান্তরালেই চলবে। কর্মসূচিকে তিন দফায় সাজা হয়েছে। এদিন সকালে তৃণমূল বিধায়কদের একটি কর্মশালায় প্রথমে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পিকে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দলনেত্রীর রাজনৈতিক অতীত এবং প্রশাসনিক সাফল্যকে সামনে রেখেই পথে নামতে বলা হয়েছে একেবারে নীচেরতলার পদাধিকারীদের। ইন্ডোরে মমতা বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের তুলনা টেনে বলেন, ‘‘ঔদ্ধত্য যেন না থাকে। কীসের ঔদ্ধত্য? আজ আছি, কাল নেই।’’ তারপরই বিজেপির নাম না করে তিনি বলেন, ‘‘আমরা কেউ যেন কেন্দ্রের সকারের নেতাদের কাছ থেকে ঔদ্ধত্য, অহঙ্কার না শিখি।’’
তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘নির্বাচন আসবে যাবে। পুরসভা, পঞ্চায়েত, বিধানসভার সব নির্বাচনই গণতন্ত্রের ভিত্তি। সারা বছর ধরে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী রাখতে পারলে নির্বাচনের সময় বেশি পরিশ্রম করতে হয় না।’’ রাজনৈতিক মহলের ধারণা, আসন্ন পুরসভা ভোটে জয়ের জন্য গাজোয়ারি না করার বার্তাই দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী।
দলীয় শৃঙ্খলা না মানায় মালদহ জেলার তৃণমূল নেতৃত্বকে সতর্ক করে মমতা বলেন, ‘‘প্রয়োজন হলে নতুন নেতৃত্ব তৈরি করে নেব।’’